আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সমাবেশের অনুমতি দিবে না। বিশেষ করে বিপ্লব কুমার তো আরও একটু আগ বাড়িয়ে বললেন, যুদ্ধপরাধীদের দল, নিবন্ধনহীন দল। গতকালই তার এই বক্তৃতাকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান অত্যন্ত চমৎকারভাবে বলেছেন, পক্ষপাতদুষ্ট, অসাংবিধানিক এবং এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য দিয়েছেন। আজকেও আমাদের ভারপ্রাপ্ত আমিরে জামায়াতের বিবৃতি গেছে। তিনি সর্বাত্মক সমাবেশ সফল করার জন্য বলেছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রস্তুতি কমিটিগুলোর মিটিং চলছে। আগামীকাল সর্বোচ্চ জনসমাগম করে আমরা শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন করব, ইনশাআল্লাহ।
জামায়াতে ইসলামী তার সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী আগামী ২৮ অক্টোবর শনিবার রাজধানী ঢাকা মহানগরীর শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ বাস্তবায়নে সহায়তা চেয়ে পুলিশ কমিশনারের নিকট লিখিতভাবে অবহিত করেছে। পক্ষপাতদুষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছে, ‘জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।’ পুলিশের দায়িত্ব হলো শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা, বাধা দেওয়া নয়। তার এই বক্তব্য অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক, এখতিয়ারবহির্ভূত ও বেআইনি। পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিগত সময় অসংখ্য বার দেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করার সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। এটি সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক দল হিসেবে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে অবাধ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মী এবং সম্মানিত ওলামা-মাশায়েখের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার তা অগ্রাহ্য করে অব্যাহতভাবে গণগ্রেপ্তার চালিয়ে আসছে। এই পরিস্থিতিতে গোটা জাতি আজ একদফার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। এমতাবস্থায় সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আমরা আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের কর্মসূচি ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছি। শান্তিপূর্ণ এই মহাসমাবেশে সুশৃঙ্খলভাবে সমবেত হয়ে এক দফা দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়নের আন্দোলনকে জনগণ বেগবান করবে। সরকারের কোনো ধরনের উসকানি, অসাংবিধানিক ও গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতায় আমরা বিভ্রান্ত হবো না।
২৮ অক্টোবর শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত মহাসমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। অনির্বাচিত অবৈধ সরকার জগদ্দল পাথরের মতো জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এই সরকারের পতন ঘটানো ছাড়া জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। জামায়াতের মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য কোনো কোনো মহলের পক্ষ থেকে নানাভাবে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। দেশবাসীকে সরকারি-বেসরকারি মহলের কোনো প্রকার গুজবে কান না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
এক্ষেত্রে প্রশাসন যদি মনে করে, তাদের অনুমতির জন্য বসে আছি, তাদের অনুমতি না হলে আমরা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করব না, আমরা মনে করি তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে এবং আমরা অনুমতি কখনোই চাইনি, আমরা সহযোগিতা চাইছি। তারা সহযোগিতা করবে না ঠিক আছে, আমরা নিজেরাই আমাদের সামর্থ্যের আলোকে শৃঙ্খলা মেইনটেন করে সুশৃঙখলভাবে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। যদি কেউ বাধা দেয় অথবা যদি আমাদের কেউ আক্রমণ করতে আসে তাহলে আমরা আত্মরক্ষা করব। কিন্তু আমরা শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ করব, ইনশাআল্লাহ।
আশরাফুল আলম ইমন : প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
মন্তব্য করুন