তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশ হিসেবে আজকের অগ্রগতি অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের ঠিকানায় যদি বাংলাদেশকে পৌঁছাতে হয় তাহলে দেশবিরোধী ও ঘৃণার রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশটাই যারা চায়নি, যারা এই দেশের পতাকার বিরুদ্ধে চার তারার পতাকার পক্ষে যুদ্ধ করেছিল পাকিস্তানিদের দোসর হয়ে, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া, তাদের আঁচলের তলায় ছায়া দিয়ে, তাদের সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করা যদি বন্ধ না হয় দেশকে আমরা স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারব না।
রোববার বিকেলে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তাদের আয়োজিত ‘১৫ আগস্ট উপলক্ষে আলোচনা : বঙ্গবন্ধু ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
হাছান বলেন, এ দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছে। মুক্তিযুদ্ধের গঠিত সরকারের অধীনেই সেক্টর কমান্ডাররা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, বেতন পেতেন। জিয়াউর রহমানও ৪শ’ টাকা বেতন নিতেন।
ঐতিহাসিক সত্যটা হচ্ছে এই যে, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং তার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণটা পাকিস্তানিদের সহযোগী হিসেবে ছিল, ঘটনাপ্রবাহ তাই প্রমাণ করে।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে বড় বেনিফিসিয়ারি হচ্ছে জিয়া ও তার পরিবার। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। তার প্রমাণ হচ্ছে- বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর খন্দকার মোশতাক তার আস্থাভাজন বলেই জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনীর প্রধান নিয়োগ করেছিলেন।
জিয়া বঙ্গবন্ধুর সব হত্যাকারীকে বিদেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়ে দেশ ত্যাগের সুযোগ করে দেওয়া এবং পুনর্বাসন করেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করার জন্য জারি ইনডেমনেটি অধ্যাদেশকে বৈধতা দিতে ১৯৭৯ সালে পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিনে সেটিকে আইনে রূপান্তরিত করার জন্য সরকারি দলের পক্ষে প্রস্তাব এনে সেই আইন পাশ করা হয়েছিল।
ইতিহাসের সত্যগুলো তুলে ধরতে গেলে কিছু কথা বলতে হয় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সব মুক্তিযুদ্ধবিরোধী মানুষ বিএনপিতে যোগদান করেছিল। বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করার উদ্দেশ্যে ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন করতেন এবং মির্জা ফখরুল সাহেবের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তার বাবাও একজন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী মানুষ ছিলেন, স্বাধীনতার পর কিছু দিন আত্মগোপনে ছিলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে সাবেক মন্ত্রী এ. বি তাজুল ইসলাম এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল জলিল ভুঁইয়া, আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন