হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি মুফতি খলিল আহমদ কোরেশী কাসেমী বলেছেন, যেসব দাবি উত্থাপন করা হয়েছে সেগুলো সরকারকে মানতে হবে। না হলে দেশের সব মানুষকে নিয়ে হেফাজতের নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে যাবে। হেফাজত ছিল, আছে এবং থাকবে। আমরা আগের চেয়ে বেশি মজবুত হয়েছি। সহজে বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ দেশে ইসলাম বিরোধী আইন পাস হবে আমরা তা মানব না।
শনিবার (৩ মে) ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাই বিপ্লবের ৮ মাস পর আমরা সমবেত হয়েছি। এটি গর্বের না, বরং লজ্জার। ৫ আগস্ট দেশের মানুষ জানিয়ে দিয়েছে এই ভূখণ্ডে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন আর হবে না। যারা দেশের আলেমদের দাড়ি টুপি টেনে নিয়ে হত্যা করেছিল তাদের পুনর্বাসন আর হবে না।
তিনি বলেন, ড. ইউনূস বলেছেন- আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করবে কী করবে না সেটি আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত। ড. ইউনূস ভুলে যাবেন না আমরা আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৫ আগস্ট। আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশে এবং জানাজা হয়েছে দিল্লিতে। শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে আওয়ামী লীগ আর ফিরতে পারবে না। আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। সেটি সন্ত্রাসী সংগঠন। অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে সংস্কার কাজ করতে চাই।
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, শাপলা চত্বরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমি উপস্থিত হয়েছি। একইসঙ্গে জুলাই বিপ্লবের শহীদদেরও স্মরণ করছি। এখন আমরা মুক্ত বাংলাদেশে সমাবেশ করছি।
তিনি বলেন, শাপলা চত্বরের গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবিলম্বে মামলা দায়ের করতে হবে। গাজায় এবং কাশ্মীরে নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে দাঁড়াতে হবে মুসলিম হিসেবে।
ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের পক্ষে দাবি জানাচ্ছি অবিলম্বে নারী সংস্কার কমিশন বাতিল ও কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে। আলেমদের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো নীতি প্রণয়ন জনগণ মানবে না। শাপলা চত্বরে হেফাজতের নেতাকর্মীদের হত্যাকাণ্ডের বিচার অবিলম্বে করতে হবে। আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। তার আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তা না হলে হেফাজতে ইসলাম পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
নায়েবে আমির মুফতি জসীম উদ্দিন বলেন, ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশে বহুত্ববাদ বাদ দিতে হবে। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল করতে হবে। ইসলাম ধর্মে নারীদের সবচেয়ে বেশি অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। কেয়ামত পর্যন্ত কোনো ধর্ম এ ধরনের মর্যাদা দিতে পারবে না। বর্তমান সরকার কিন্তু আমাদের সবার আন্দোলনের ফসল। অতএব আল্লাহদ্রোহী ও আলেমদের হত্যাকারীদের বিচার করা হবে সরকারের প্রথম সংস্কার।
হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের নামে কুসংস্কার করছে। তারা ফিরে না আসলে হেফাজতে ইসলাম কঠিনতম কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। তাদেরকে মুসলমান নামে বসবাস করতে দেওয়া হবে না।
যুগ্ম মহাসচিব ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, শাপলা চত্বরে হেফাজতের নেতাকর্মীদের হত্যাকাণ্ডের বিচার অবিলম্বে করতে হবে। জেল জুলুমকে আলিঙ্গন করে হেফাজতে ইসলাম এখনো টিকে আছে। আবারও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও ইসলামের ওপর আঘাত আসলে মোকাবিলার জন্য হেফাজতে ইসলাম টিকে আছে। যারা নারী পুরুষের সমান অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করছে তারা পশ্চিমাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়।
মন্তব্য করুন