সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি।
রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে বিএনপির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা ছাড়াও অভিযোগে উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
এদিন দুপুরে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান এই অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেন।
অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চিফ প্রসিকিউটর জানান, তদন্ত শেষে অভিযোগের বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বিএনপির অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ১১টি গুমের ঘটনায় অভিযুক্তরা জড়িত। ভুক্তভোগীদের দাবি, শুধুমাত্র বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার ‘অপরাধে’ তাদের পরিবারের সদস্যদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং নির্মম নির্যাতন করা হয়।
এর আগে, গত ৩ জুন শেখ হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিজের গুমের অভিযোগ জমা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গিয়ে এ অভিযোগ জমা দেন তিনি।
অভিযোগ জমা দিয়ে বিএনপি নেতা সাংবাদিকদের বলেন, গুম, খুনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হবে। তবে এখনো এ ব্যাপারে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম দেখা না যাওয়ায় ক্ষোভ জানান তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ যারা গুমের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এই সরকারের দায়িত্ব সবাইকে আইনের আওতায় আনা। সেই সঙ্গে দেশ থেকে গুম-খুনের সংস্কৃতি চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন। প্রায় দুই মাস পর ১১ মে, ভারতের শিলংয়ে তাকে খুঁজে পায় স্থানীয় পুলিশ। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া প্রবেশের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। ২০১৮ সালে নিম্ন আদালত সালাহউদ্দিনকে খালাস দিলেও ভারতের সরকার আপিল করে। ফলে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।
মন্তব্য করুন