ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। এমন অভিযোগ করে অবিলম্বে তাদের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য।
চার দলীয় এই জোটের দাবি, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ড. ইউনূস ও তার সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। সুতরাং ড. ইউনূসের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান অসম্ভব।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জোটের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের শরিক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান লিখিত বক্তব্যে এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থান চব্বিশের জনআকাঙ্ক্ষা ছিল সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য বিলোপ করে সমতা, শান্তি-শৃঙ্খলা, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থান। এর একটিও বাস্তবায়ন করতে পারেনি বর্তমান সরকার। বরং সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত স্বৈরাচার আমলে আইন ও বিচার ব্যবস্থায় দ্বৈতনীতি, ক্ষমতাসীনদের সকল অন্যায়ের পক্ষে রাষ্ট্রযন্ত্রকে লেলিয়ে দেওয়া, ন্যায্য হলেও বিরোধী মতকে দমন করা। প্রয়োজনে গুম-খুনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করা হতো। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী জনআকাঙ্ক্ষা ছিল এসবের অবসান ঘটিয়ে আইন হবে সবার জন্য সমান। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিগত স্বৈরাচার আমলের মতোই আইনকে ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।’
বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মব সন্ত্রাস। দেশকে মবের রাজ্য বানিয়ে ফেলেছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ও সুশাসন অনিশ্চিত। টাকা ছাপাবে না বলে দফায় দফায় টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে কোনোমতে চালু রাখা হচ্ছে, যা অদূর ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। শিল্পে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে না। নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে না। পুরোনো প্রতিষ্ঠিত শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হু হু করে বেকার বাড়ছে। যার প্রভাব সমাজে বহুমাত্রিক অপরাধ ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
বাম ঐক্য বলছে, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নামে বি-রাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্র চলছে। তাই সকল রাজনৈতিক দলের উচিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বয়কট করা, বাতিল চাওয়া।’
সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) সভাপতি কমরেড হারুন চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ডা. সামছুল আলম, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন