কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০১:২১ এএম
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৫১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচানোর অভিযোগ কাদেরের, সাদিক কায়েমের স্ট্যাটাস

সাদিক কায়েম। ছবি : সংগৃহীত
সাদিক কায়েম। ছবি : সংগৃহীত

ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম। এ ব্যাপারে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দেন।

রোববার (৩ আগস্ট) রাতে দেওয়া স্ট্যাটাসটি পাঠকদের সুবিধার্থে হুবহু তুলে ধরা হলো—

‘১. বিপ্লবের পর দুটি কনসার্ন ছিল। প্রথমটি ছিল অপরাধের বিচার। দ্বিতীয়টি ছিল বিচারের নামে নিরীহ কোনো ব্যক্তির হয়রানি না হওয়া।

সে সময় অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানান যে, ‘তারা ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কোনো ফৌজদারি অপরাধ করেননি এবং ব্যক্তিগত আক্রোশবশত মামলায় তাদের নাম যুক্ত করা হচ্ছে।’

স্বাভাবিকভাবেই গণহারে মামলার আশঙ্কা থাকলে কে অপরাধী আর কে নিরপরাধ—তা যাচাই করার জন্য আন্দোলনে সক্রিয় নানা স্টেকহোল্ডারের কাছে তথ্যগুলো ফরওয়ার্ড করে পারস্পরিক ফিডব্যাকের ভিত্তিতে ভেরিফাই করাটা জরুরি ছিল। তাই বেশ কয়েকটি কনসার্ন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পেয়ে আমি এনসিপি নেতা ও সংস্কার কমিশনের এক সদস্য আরমান হোসেন এবং মাহিনকে ফরওয়ার্ড করি অধিকতর তদন্তের জন্য।

তাদের বলেছি, এমন একটি দাবি এসেছে যে তারা হামলায় যুক্ত ছিলেন না—এই দাবি খতিয়ে দেখতে, যাতে অসচেতনতাবশত নিরপরাধ কেউ ভিকটিম না হন।

২. এনসিপি থেকে শুরু করে সব দলের নেতারাই সেসময় এরকম বিভিন্ন সুপারিশ পেয়েছেন এবং নিজেদের মধ্যে চালাচালি করেছেন ভেরিফাই করার জন্য।

আব্দুল কাদের নিজেই উল্লেখ করেছেন, মামলার তালিকাগুলো আমরা পারস্পরিক আলোচনা করে প্রস্তুত করেছি। এখন, নিজেদের মধ্যে কথা না বললে কীভাবে জানব—আসলে কেউ অপরাধী, নাকি তাকে হয়রানি করা হচ্ছে?

৩. স্ক্রিনশটে যাদের নাম যুক্ত আছে, তারা কেউই শিবিরের কেউ না। ৫ আগস্টের পর থেকেও তারা শিবিরের কোনো পদে বা কর্মসূচিতে ছিলেন না। ফলে, ছাত্রলীগে লুকিয়ে থাকা শিবিরকে বাঁচাতে সহায়তা করার ন্যারেটিভটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

৪. সাঈদী নামের এক ছেলেকে মামলা থেকে বাঁচাতে আমি নাকি বিভিন্ন জায়গায় কল করেছি—এটাও একটি মিথ্যা।

সাঈদী অপরাধী, এবং তাকে বাঁচানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।

৫. মুহসীন হলের একজনের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ ওই শাহাদাতকে আমি চিনিই না।

তা ছাড়া, কাদের লিখেছে, ‘চব্বিশ সালের সেপ্টেম্বরে এই মামলা হওয়ার পরে শাহাদাতকে নিয়ে একজন পোস্ট করেন। পরবর্তী সময় ওই পোস্টদাতার সাথে শিবিরের তৎকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম যোগাযোগ করেন।’

আচ্ছা, আমি যদি ফোন দিতেই চাইতাম, তাহলে তো সেটা মামলা হওয়ার আগেই দেওয়ার কথা ছিল। মামলা হওয়ার পরে কেউ একজন ফেসবুকে পোস্ট দিলে সেই পোস্টদাতাকে ফোন দেওয়ার কী দরকার!

এলাকায় থাকতে কোনো সময় শিবির করেছে, তামিরুল মিল্লাতে অধ্যয়নরত অবস্থায় শিবিরের কোনো আয়োজনে অংশ নিয়েছে, শিবিরের নেতা হিসেবে বা শিবির কানেকশন ব্যবহার করে জুলাইয়ের বড় নেতাও হয়েছে—কিন্তু এখন উগ্র শিবিরবিদ্বেষী—এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়।

যদি জীবনের কোনো এক ধাপে সাময়িক সময়ের জন্য ব্যক্তিগত সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে কেউ শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, পরবর্তী সময় কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিবিরবিরোধী ভূমিকা নেয় অথবা ছাত্রলীগে যুক্ত হয়—এবং, এমন নরপশুদের কর্তৃক ছাত্রশিবিরের জনশক্তিরা নিয়মিত ভিকটিম হওয়া সত্বেও তাদের কর্মকাণ্ডের দায়ভার যদি শিবিরকে নিতে হয়, তাহলে শিবির ছেড়ে বাগছাস-এনসিপিতে চলে যাওয়া ব্যক্তিদের কৃতিত্ব, দুর্নীতিসহ অন্যান্য নেতিবাচক ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের দায়ভারও তো শিবিরকে নিতে হবে! সেটা কি যৌক্তিক হবে?’

পরে ওই পোস্টের কমেন্টে সাদিক আরও মন্তব্য করেন। তিনি লেখেন, ‘কাদের যে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করেছেন সেই চ্যাট আব্দুল কাদেরের সঙ্গে হয়নি। তা হয়েছে এনসিপির অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে। আরেকজন ব্যক্তির সঙ্গে হওয়া চ্যাটের স্ক্রিনশট আব্দুল কাদেরের মাধ্যমে অপব্যাখ্যা সহকারে পাবলিকলি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসার মাধ্যমে ঘৃণ্যতম সংস্কৃতির সূচনা হলো। এভাবে ব্যক্তিগত ফায়দা নেওয়ার জন্য ব্যক্তিগত আলাপ বা প্রাইভেট ইনফরমেশন সামনে আনার সংস্কৃতি তৈরি হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে অবিশ্বাস, অনাস্থার সৃষ্টি হবে। যা দীর্ঘ মেয়াদে গোটা জাতির জন্যই ক্ষতি বয়ে আনবে। তা ছাড়া স্ক্রিনশট পলিটিক্স শুরু হলে এনসিপি-বাগছাসে থেকে দিনরাত শিবির ব্যাশিং করা অনেকেরই রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নাই হয়ে যেতে পারে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের বাধায় প্রাণ গেল নবজাতকের

বিয়ের অনুষ্ঠানেই বিশাল টাকার মালিক দম্পতি, স্কুল নির্মাণে দান করলেন দেড় কোটি

স্বাধীনতা দিবসে দীর্ঘতম ভাষণ দিয়ে মোদির রেকর্ড

মেসির চেয়েও বেশি বিক্রি হচ্ছে সন হিউং মিনের জার্সি!

সাজেকে যাচ্ছিলেন ৬ বন্ধু, অতঃপর...

বর্জ্যপানি বিশ্লেষণ / মেথ, কোকেইন ও হেরোইন ব্যবহারে নতুন রেকর্ড

জলাধার, মাঠ ও পার্ক সংরক্ষণে ডিএনসিসির চিঠি

বৈধ না হলে নির্বাচনের কোনো মানে নেই : ড. ইউনূস

গণমাধ্যমে লুকিয়ে থাকা গণহত্যার সহযোগীদের দ্রুত বিচার দাবি জেআরজেএর

নির্বাচনের আগে রাকসুর ফান্ড নিয়ে যত প্রশ্ন

১০

সিপিএলের প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ সাকিব

১১

যুদ্ধ শেষের শর্ত জানালেন নেতানিয়াহু

১২

পুরান ঢাকায় সেনাবাহিনীর অভিযান, ৮ চাঁদাবাজ আটক 

১৩

বিমানের ভেতরে সিগারেট ধরিয়ে আসনের কভার জ্বালানোর চেষ্টা যুবতীর!

১৪

এনসিপি থেকে ২৫ নেতাকর্মীর পদত্যাগ

১৫

মুরাদনগরে শ্রেণিকক্ষে ছুরি প্রদর্শনের ভিডিও ভাইরাল, ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

১৬

সিলেটে খাল থেকে ভারতীয় নাগরিকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

১৭

এবার পাকিস্তানকে মোদির কঠোর হুঁশিয়ারি

১৮

ইলিশ খেলে দূরে থাকবে এই কঠিন ৪ রোগ

১৯

১৫ আগস্ট : টিভিতে আজকের খেলা

২০
X