সরকার হটানোর চলমান আন্দোলন জোরদার করতে তরুণ-যুবকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, তারা (সরকারের মন্ত্রীরা) যত কথাই বলুক লাভ নেই। এখন মানুষ অন্তর থেকে পরিবর্তন চায়, প্রতিটি মুহূর্তে এদেশের মানুষ এই সরকারকে সরে যেতে দেখতে চায়। কারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।
আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমি বলতে চাই- সকল যুবক-তরুণদের আজকে এগিয়ে আসতে হবে এদেশকে রক্ষা করতে, এই জাতিকে রক্ষা করতে। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা লড়াই করেছিলাম ১৯৭১ সালে, যে স্বপ্ন নিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ তার সারাটা জীবন লড়াই করেছেন, আসুন আমরা আজকে সবাই মিলে সেই সংগ্রাম করে এই ফ্যাসিবাদকে দূর করে- সত্যিকার অর্থেই একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠা করি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মরণে এই আলোচনা সভা হয়। জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এই সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন। ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, বিএনপির মিডিয়া সেলের জহির উদ্দিন স্বপন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ভাসানী অনুসারী পরিষদের হাবিবুর রহমান রিজু, বাবুল বিশ্বাস, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধ্যাপক সাঈদ উজ জামান অপু, জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহ চৌধুরী সহধর্মিণী নারী নেত্রী শিরীন হক উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন যে জগদ্দল পাথরের মতো এই জাতির উপরে চেপে বসে আছে যে সরকার, এটা ভয়াবহ একটা দানবীয় সরকার। দানব বললে সঠিক বলা হবে না। সব কিছু এরা তছনছ করে ফেলেছে, আমাদের যা কিছু অর্জন সব অর্জন নষ্ট করে দিয়েছে। আসুন সময় খুব কম। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই লড়াই-সংগ্রাম এগিয়ে নেই। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।
রাষ্ট্রের সংস্কার হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, রাষ্ট্রের সংস্কার। অবশ্যই আমরা সব দল মিলে কিন্তু রাষ্ট্রের সংস্কারের কথা বলেছি। শুধু একটা নতুন সূচনা হয়েছে। এই শুভ সূচনাটাকে যদি আমরা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারি তাহলে নিঃসন্দেহে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা এই রাষ্ট্রের পরিবর্তন, কাঠামো পরিবর্তন এবং জনগণের কল্যাণের জন্য সত্যিকার অর্থে আমরা ইতিবাচক কিছু কাজ করতে পারব। যা করলে ডা. জাফরুল্লাহর আত্মা শান্তি পাবেন।
জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, যারা আমাদের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় তাদের বিদায় করে জাতিকে রক্ষা করতে হবে। এটা আরেকটা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ। অনেকে তখন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাইনি আমি তাদের বলব, এই দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে আপনাদের বাবার, আপনাদের বড় ভাইয়ের, আপনাদের দেশের জাতির জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আসুন আমরা একসাথে লড়াই করি। এই লড়াই আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার লড়াই, এই লড়াই আমাদের জন্মভূমির মাটিকে রক্ষা করার লড়াই।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশে সংকট শুধু রাজনৈতিক সংকট নয়। বাংলাদেশে আজকে জিনিসপত্রের দাম গত ১২ বছরে সবচাইতে বেশি, মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ ১২ বছরের মধ্যে। বাংলাদেশে এখন সুশাসন নেই, বাংলাদেশে এখন বিচার ধবংস হয়ে যাচ্ছে। এই সমস্ত কিছু থেকে পরিত্রাণে আমাদের দেশের শাসন যারা করছে, অন্যায় যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মন্তব্য করুন