

বাংলাদেশের শত্রুরা আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে, দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আজকের যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, যখন একটা অনিশ্চয়তা হতাশার মধ্যে চলে যাচ্ছে এবং প্রত্যেকটি মানুষ বারবার চিন্তা করছে কী হবে, কী হতে পারে?’
রোববার (২ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা দেখছি, বাংলাদেশের শত্রুরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে, তারা মাথা তুলে উঠতে শুরু করেছে। আমরা দেখছি, যতই সময় যাচ্ছে ততই বাংলাদেশে একটা এনার্কিক সিচুয়েশন, পুরোপুরি একটা নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা দেখছি, সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেই প্রোপাগান্ডা, মিথ্যা তথ্য প্রচার করে দেশে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে।’
এরকম পরিস্থিতিতে ৭ নভেম্বর ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ দিবস হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে আমাদের পরিচালিত করেছিলেন দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে এবং পরিবর্তিকালের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। একইভাবে আমরা দেখছি, আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনি সেই সুদূর লন্ডন থেকে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করছেন, আমাদের দলকে পরিচালিত করছেন এবং জাতিকে নতুন আশা জোগাচ্ছেন।’
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে দল ও অঙ্গসংগঠনের যৌথসভা হয় দুপুরে। এই সভায় বিএনপি মহাসচিব সভাপতিত্ব করেন। পরে নেতাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন তিনি।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের প্রেক্ষাপট এবং জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রের দায়িত্বে আসার পটভূমি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তার সেই শাসন আমলে দেশ একটা কর্মযজ্ঞে নেমে পড়েছিল, সর্বজন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আবার সেই বাংলাদেশের শত্রুরা নির্মমভাবে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে হত্যা করে এবং হত্যার মধ্য দিয়ে আবার সেদিন একটা কালো হত্যায় সূচনা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার এসেছি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে দর্শন দিয়ে গিয়েছিলেন, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের যে দর্শন সেই দর্শন কখনো পরাজিত হতে পারে না এবং সেই জন্যই বিএনপিও কখনো পরাজিত হয়নি। বারবার জেগে উঠেছে, একেবারে সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতোই বিএনপি জেগে উঠেছে।’
একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ অর্থনীতি, শিক্ষা, শিল্প, কৃষি গণমাধ্যম ও নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমানের সংস্কার কর্মসূচি তু্লে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তার বিভিন্ন পদক্ষেপে দেশে নতুন এক কর্মউদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছিল। অর্থাৎ তার সেই শাসন আমলে দেশ একটা কর্মযজ্ঞে নেমে পড়েছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আবার সেই বাংলাদেশের শত্রুরা নির্মমভাবে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে হত্যা করে এবং হত্যার মধ্য দিয়ে আবার সেদিন একটা কালো হত্যায় সূচনা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭ নভেম্বর আমাদের রাজনৈতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বলেই আমরা এই দিনটিকে স্মরণ করে রাখতে চাই এবং ৭ নভেম্বরের যে দর্শন, সেই দর্শনকে সামনে নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন