সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে চূড়ান্ত ধাপের আন্দোলনে নামার আগে যুগপৎ শরিকদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করছে বিএনপি।
আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) প্রথম দিনে ধারাবাহিকভাবে ১২ দলীয় জোট, মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বৈঠক করেছে দলটি।
গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এসব বৈঠকে লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে সংযুক্ত ছিলেন। বিকেল ৪টা থেকে রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত পৃথকভাবে এসব বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএনপির পক্ষে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।
প্রথমে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক হয়। এতে জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনসুরুল হাসান রায়পুরী ও মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম এবং ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।
এরপর লেবার পার্টির সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। এতে লেবার পার্টির পক্ষে চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, মো. আমিনুল ইসলাম, রামকৃষ্ণ সাহা ও জহুরা খাতুন জুই উপস্থিত ছিলেন।
সর্বশেষ জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বিএনপির হাইকমান্ডের বৈঠক হয়। এতে জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদাত, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী ও মহাসচিব আবু সৈয়দ, বিকল্পধারার একাংশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী ও মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী ও মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আবদুল বারিক, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মন্ডল ও মহাসচিব দীলিপ কুমার দাস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিম খান, ডেমোক্রেটিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মো. আকবর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ১২ দলীয় জোট থেকে বের হয়ে যাওয়া এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের ও মহাসচিব আবদুল্লাহ আল হারুন সোহেলও সমমনা জোটের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, এসব বৈঠকে সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শরিকদের মতামত নেওয়ার পাশাপাশি বিএনপির হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) এবং পরদিন শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) যুগপতের বাকি শরিকদের সঙ্গেও বৈঠক করবে বিএনপি।
গত ১২ জুলাই থেকে একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের ঘোষিত কর্মসূচি রয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজার আগে ১৮ অক্টোবর ঢাকায় জনসমাবেশ করবে বিএনপি। সেই জনসমাবেশে থেকে সরকারকে একদফা মানতে ‘চূড়ান্ত আলটিমেটাম’ দিতে পারে দলটি। সম্ভাব্য ৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টার ওই আলটিমেটাম শেষে দুর্গাপূজার পর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে চূড়ান্ত ধাপের আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপি ও শরিকদের।
তবে ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় দুর্গাপূজার ভেতরে তারা বড় কোনো কর্মসূচি রাখবে না বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন