ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) পদত্যাগ না হলে আন্দোলনের মাধ্যমে নির্লজ্জ, অথর্ব সিইসিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে একজন প্রার্থীর ওপর দফায় দফায় হামলার নজির ইতিহাসে বিরল। কিন্তু বরিশালে আওয়ামী সরকারের সন্ত্রাসীরা একজন বরেণ্য আলেম মেয়রপ্রার্থীর রক্ত ঝরিয়ে বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। হামলায় এখন পর্যন্ত সন্ত্রাসী ও দলের দস্যুদের গ্রেপ্তার করতে না পারা রহস্যজনক।’ তিনি নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের ৫ দফা প্রস্তাব, ৮ দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর বায়তুল মুকাররমের উত্তর গেটে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমসহ অন্য নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বর্বরোচিত হামলা, বরিশাল, খুলনা সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির ধারা অব্যাহত রাখার প্রতিবাদ এবং বিকারগ্রস্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ ও অথর্ব নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবিতে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় অভিমুখে গণমিছিল পূর্ব জমায়েতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওই সময় বক্তব্য দেন—দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আশরাফুল আলম, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, কে এম আতিকুর রহমান, আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, আব্দুর রহমান, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা খলিলুর রহমান, জান্নাতুল ইসলাম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলামসহ অনেকে।
জমায়েত শেষে বেলা ১২টার দিকে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বে মিছিল বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে পল্টন মোড়, বিজয়নগর, কাকরাইল হয়ে শান্তিনগর চৌরাস্তায় পৌঁছালে পুলিশ পূর্ব থেকেই কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে মিছিলের গতিরোধ করে। ওই সময় নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে শান্ত হয়। চরমোনাই পীর বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রশাসন বাধা দিয়েছে অন্যায় করেছে।’
তিনি মিছিলে বাধাদানের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘জনতার তীব্র স্রোতে বাধা দিলে, জনস্রোতের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। তেমনি আমাদের মিছিলে বাধা দেওয়ায় জনতার রুদ্ররোষ সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে সরকারের একতরফা দালালি করলে তার ফল ভালো হয় না।
‘বর্তমান সিইসি একজন বিকারগ্রস্ত। সিইসি পদত্যাগ না করলে প্রয়োজনে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’
সিইসি একজন অবিবেচক উন্মাদের মতো মুফতি ফয়জুল করীমের শরীর থেকে রক্তক্ষরণ নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ও উপহাস করেছেন। তিনি বলেন, ‘মুফতি ফয়জুল করীম কি ইন্তেকাল করেছেন?’ একজন মানুষ কোন পর্যায়ের বিবেক বর্জিত হলে দেশের একজন সম্মানিত ব্যক্তির ব্যাপারে এ জাতীয় বক্তব্য করতে পারেন, তা আমাদের ভাবতেও অবাক লাগে। বরিশালে মুফতি ফয়জুল করীমের ওপর আক্রমণকারী এবং তাকে অপমান অপদস্তকারী সন্ত্রাসী এবং ভোট ডাকাত ও দস্যুদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।’
চরমোনাই পীর আরও বলেন, ‘সরকারের দুঃশাসন ও দুর্নীতির কারণে দেশব্যাপী বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ভয়াবহ সংকট চলছে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারছেন না। নতুন করে কোনো কলকারখানা করতে পারছেন না। বিদ্যুতের বিল তো জনগণ ঠিকই দেয়। কিন্তু পায়রাতে (বিদ্যুৎকেন্দ্র) কয়লার যে বিল, সেটি ওনারা শোধ করেন না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকারের ব্যর্থতা, অদূরদর্শিতা ও দুর্নীতির কারণে আজ জনগণকে চূড়ান্ত ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। দেশব্যাপী বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ভয়াবহ সংকট সরকারের ভুল নীতি ও ভুল কৌশলের কারণে। যার মাশুল দিতে হচ্ছে এখন সাধারণ মানুষকে। ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্যাসের সংকট মারাত্মক রূপ নিয়েছে।’
মন্তব্য করুন