কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
১২ দলীয় জোটের সমাবেশে বক্তারা

আ.লীগ সরকারের ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে

১২ দলীয় জোটের সমাবেশ। ছবি : কালবেলা
১২ দলীয় জোটের সমাবেশ। ছবি : কালবেলা

অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে জনগণের কাতারে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। তা না হলে আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে। তারা সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, পরিস্থিতি ঘোলা না করে সংঘাতের পথ ছেড়ে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়ে জনগণের কাতারে এসে রাজনীতি করার আহবান জানাচ্ছি। শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে জনগণ বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনো পাতানো নির্বাচন হতে দেবে না।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কির সামনে (বিজয় চত্বর) ১২দলীয় জোটের উদ্যোগে সরকার পতনের একদফা এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার অনুমোদনের দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দলীয় নেতৃবৃন্দ এসব অভিমত ব্যক্ত করেন।

জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী ১২দলীয় জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ১২দলীয় জোটের সমন্বয়ক এডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, ইসলামিক ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অনিক আলী সাহিদি প্রমুখ।

সভার সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজউদ্দিন টিটু। সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে রেহাই পাবে না। তাদেরকে পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সরকারের জন্য ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে। যদিও সেটা আমাদের কাম্য নয়। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীনরা দেশ থেকে পালানোর জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছেন। এসবের তো প্রয়োজন নেই। আপনারা ক্ষমতা ছেড়ে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন করুন।

কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, এই সরকারের পরিণতি হবে মারাত্মক। তাদের হাতে মানুষের জীবন ও দেশের অর্থনীতি নিরাপদ নয়। তাদেরকে পদত্যাগ করতেই হবে। তা না হলে দেশের মানুষ যা প্রয়োজন তাই করবে। বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে বলবো এবার কোনো ছাড় নয়। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আসুন আরেকবার ধাক্কা দেই। যাতে এই সরকার বিদায় নিতে বাধ্য হয় এবং দেশের অবাধ ও সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়।

গণঅধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ক্ষমতায় থাকার চক্রান্ত করছে। আজকে দেশের রিজার্ভ তলানিতে। গার্মেন্টস খাত বিপদে পড়েছে। দ্রব্যমূল্য দাউ দাউ করে বাড়ছে। দেশ যেন দেউলিয়াত্বের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশও আজকে ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনের মতো হয়ে গেছে। নব্য ইহুদিদের দালাল থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে। বাকশালীদের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই।

জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য নেতাদের বক্তৃতা বিবৃতি এবং নির্বাচন কমিশনের কথাবার্তা ভাবগতি দেখে তাদের কানের মধ্যে এখনো পানি গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। তারা ২০১৪ সালের মতো শক্তি প্রয়োগ করে যেকোনো ভাবেই একতরফা একটি নির্বাচন সেরে ফেলতে চায়। এতে বোঝা যাচ্ছে জনগণের আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বের অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচনের চাপ তাদের বোধগম্য হচ্ছে না। তারা বুঝতে চাচ্ছে না কী ভয়াবহ পরিণত ডেকে আনতে যাচ্ছে তারা। একারণেই হয়তো ওবায়দুল কাদের বিএনপি ও আন্দোলনকারীদের হেফাজতের চাইতে খারাপ পরিণতির হুমকি দিয়েছেন। এখানে দুটো বিষয় প্রকাশ হলো, হেফাজতের উপর হত্যাযজ্ঞের স্বীকারোক্তি এবং একইভাবে রক্তাক্ত করে আন্দোলন দমনের প্রকাশ্য ঘোষণা, যা দেশবাসী ও দুনিয়ার মানুষকে অবাক ও হতবাক করে দিয়েছে। বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে রক্তাক্ত যুদ্ধ ঘোষণা!

বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, এখনো সময় আছে একদফা দাবি মেনে নিয়ে সংঘাতের পথ ছেড়ে শান্তির পথে এগিয়ে আসুন। সংঘাতের পথে গেলে এবারে জনগণকে পরাজিত করা সম্ভব হবে না। কারণ জনগণের সঙ্গে বিশ্ব জনমত রয়েছে।

লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ফারুক রহমান বলেন, সরকার পক্ষ অনুধাবন করছে, সুষ্ঠু নির্বাচন মানেই নিশ্চিত নির্ঘাত পরাজয়। পরাজয় মানেই ১৫ বছবের অপকর্ম লুটপাট ও দুঃশাসনের কারণে অবধারিত বিচারের সম্মুখীন হওয়া। একারণেই তারা মরিয়া হয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করছে। তাদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।

অন্য বক্তারা বেগম জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দেয়াকে শেখ হাসিনার নিষ্ঠুরতম প্রতিহিংসা উল্লেখ করে বলেন বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে শেষ হাসিনাকে পরিবর্তিত পরিস্থিতির দায় নিতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সরকারি কর্মচারীরা দাফনের জন্য পাবেন টাকা

দেড় যুগেও নির্মাণ হয়নি জহির রায়হান মিলনায়তন

দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, দুই উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

৫ অভ্যাসে বার্ধক্যেও ভালো থাকবে হৎপিণ্ড

অনশন প্রত্যাহার করল বেরোবি শিক্ষার্থীরা

‘ভুল চিকিৎসায়’ একদিনে দুই শিশুর মৃত্যু

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর

কাভার্ডভ্যানের চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু

মাস্ক পরে হাসপাতালে দীপু মনি

ছাত্র সংসদের দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ ঘিরে বিভক্ত বেরোবির শিক্ষার্থীরা

১০

বন্ধুত্ব চাইলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

১১

গাজা সীমান্তে ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করল মিসর

১২

জাজিরা হাসপাতালে দুদকের অভিযান, অনিয়মে জর্জরিত স্বাস্থ্যসেবা

১৩

ডেজার সভাপতি প্রকৌশলী রুহুল আলম, সম্পাদক প্রকৌশলী চুন্নু

১৪

নানা আয়োজনে গাকৃবিতে মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন

১৫

বিপিএলের ফিক্সিং ইস্যুতে সতর্ক অবস্থানে তামিম

১৬

রাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু বুধবার

১৭

এবার সিলেটের উৎমাছড়া থেকে ২ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ

১৮

জমি রেকর্ড সংশোধনের মামলা দায়েরের শেষ সময় সেপ্টেম্বরে

১৯

পায়ের ফাঁকে বালিশ দিয়ে ঘুমালে কী হয়, জানেন কি?

২০
X