বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, ‘২৮ অক্টোবরে পরিণতি ১০ ডিসেম্বরের মতো হবে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই উক্তি প্রমাণ করে তারা কতটা সীমাহীন অগণতান্ত্রিক, ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার, কর্তৃত্ববাদী এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকার। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের মনে রাখা উচিত এটা ২০২২ এর ১০ ডিসেম্বর নয়, এবার তেমন কিছু করতে গেলে জনগণ তাদের ঘিরে ধরবে, আদর আপ্যায়ন করে দেবে। ১০ ডিসেম্বর, শাপলা চত্বরের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে বানচাল করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নকআউট হয়ে গিয়েছিল।
আজ শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে দলীয় কার্যালয়ে সদ্য কারামুক্ত নেতাকর্মীদের সংবর্ধনা এবং কারাবন্দি নেতাকর্মীদের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন প্রিন্স।
তিনি বলেন, জনগণ দমন, নিপীড়ন উপেক্ষা করে তৎকালীন সময়ে স্মরণকালের বৃহত্তম জনসমাবেশ ঘটিয়ে সরকারের গালে চপেটাঘাত করেছিল ১০ ডিসেম্বর। তাই ১০ ডিসেম্বরের চেতনায় ২৮ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের মহাযাত্রা শুরু হবে। বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত জনগণ মহাযাত্রা চালিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
প্রিন্স বলেন, দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের চরম ক্রান্তিলগ্নে এক দফার আন্দোলন চূড়ান্ত ও যৌক্তিক পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অগণতান্ত্রিক সরকার এই আন্দোলন দমন করতে গ্রামগঞ্জের নিরীহ, নিরাপরাধ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দিয়ে রাতের অন্ধকারে গ্রেপ্তার করছে। আমরা রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে কিছু নেতাকর্মীকে মুক্ত করেছি। নেতাকর্মীদের মুক্তি আন্দোলনের শক্তি, গণ আন্দোলনে সাহস জোগাবে। তাদের আত্মত্যাগ আন্দোলনকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। ২৮ ডিসেম্বর মহাসমাবেশে বাধা দিলে সারা দেশেই মহাসমাবেশ ছড়িয়ে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সংঘাত সৃষ্টি করতে আসলে দায়-দায়িত্ব তাদেরই বহন করতে হবে। ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সসম্মানে বিদায় না নিলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সরকারের পতন নিশ্চিত এবং বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি অবিলম্বে হালুয়াঘাট পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফুল ইসলাম জাহিদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবি করে কারামুক্ত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র কারাগার থেকে বৃহৎ কারাগারে আসলেন। গণ আন্দোলনের বিজয় সুনিশ্চিত করে দেশ, জাতি ও জনগণকে বৃহৎ কারাগার থেকে মুক্ত করা হবে।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আসলাম মিয়া বাবুলের সভাপতিত্বে ও আবু হাসনাত বদরুল কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আলমগীর আলম বিপ্লব, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি আজিজ খান, মাসুম বিল্লাহ, উত্তর জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক হোসনে আরা নীলু, বিএনপি নেতা শামসুল হক, রফিকুল ইসলাম, রমজান আলী, কৃষক দলের উপজেলা সভাপতি আনোয়ার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের হালুয়াঘাট উপজেলার আহ্বায়ক রুহুল আমিন খান, ছাত্রদলের উপজেলা আহ্বায়ক নাইমুর আরেফীন পাপন, তাঁতীদলের উপজেলা আহ্বায়ক আকিকুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের উপজেলা আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, শ্রমিক দলের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মশিউজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সদ্য কারামুক্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে হারুন অর রশীদ, আবদুল হাই, ক্বারী আলমাস, মোক্তার হোসেন, হাবলু মিয়া, আক্তার হোসেন মেম্বার, ফারুক হোসেন, আবুল কালামকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। গত ৫১ দিনে হালুঘাট উপজেলার ১৩ নেতাকর্মীকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ৬৩ জনকে নামে ও অজ্ঞাত ১১০ আসামি করে দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে সবাই উচ্চ আদালতে জামিনে আছেন।
এদিকে আজ দুপুরে হালুয়াঘাট পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সদ্য কারাবন্দি শরীফুল ইসলাম জাহিদের বাসায় যান প্রিন্স। তিনি তার পিতা-মাতার সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের সান্ত্বনা দেন এবং ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন