আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচনের কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে বিরোধীদলের নেতা ও জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের চিঠি প্রসঙ্গে কথা বলেছেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘ইসিতে চিঠি দেওয়ার পর আমি রওশন এরশাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওনার তো চিঠি দেওয়ার এখতিয়ার নেই। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, ‘না বুঝে ইসিতে চিঠি পাঠিয়েছেন।’ রোববার (১৯ নভেম্বর) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সাম্প্রতিক ‘চিঠি চালাচালি’ নিয়ে দলের অবস্থান তুলে তিনি এসব কথা বলেন। চুন্নু বলেন, বিরোধীদলের নেতাকে কয়েকটি লোক ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উদ্দেশ্যে চুন্নু বলেন, দুই দল জনস্বার্থ বাদ দিয়ে প্রেস্টিজ ইস্যুতে রাজনৈতিক সংকট সমাধান করেনি। এই পরিস্থিতিতে মানুষ রাজনৈতিক অনিশ্চিয়তার কাছে জিম্মি। এই শঙ্কা থেকে মুক্তির জন্য সব দলের ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনী পরিবেশ দরকার। বিএনপির নির্বাচনে আসা না আসা নয়- ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত হলেই আমরা নির্বাচনে যাব। ভোটাররা নিরাপদে ভোট দিতে পারবে এরকম আস্থা, বিশ্বাসের প্রেক্ষিতে জাপা নির্বাচনে যাবে।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি চায় সংবিধানের আলোকে পথ বের করে সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে দ্বিধা ও সংশয়ের মধ্যে আছি। দ্রুত নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাব। সিদ্ধান্ত হলে জোট-মহাজোটে নয়- ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়ে চুন্নু বলেন, আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব। সঠিক ভোটে একটি আসন না পেলেও আপত্তি নেই। তবুও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেশে আসুক।
আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও বাম দলগুলো গত ৩৩ বছরে দেশে গণতন্ত্র কায়েমের কথা রক্ষা করেনি মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, জাপার লাঙ্গল প্রতীক বরাদ্দ ও মনোনয়ন দেওয়ার মালিক জি এম কাদের। দলে কোনো দ্বন্দ্ব নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ৭৭টি জেলার বর্তমানে নেতৃত্বের প্রতি কোনো আপত্তি নেই। পার্টির অপর পক্ষ যেটি বলা হচ্ছে- সেখানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছাড়া বাকিরা সবাই বহিষ্কৃত। দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রওশন এরশাদের কোনো এখতিয়ার নেই। তাকে কিছু লোক বিভ্রান্ত করছে বলেও জানান চুন্নু।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৮ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বরাবর সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠানো হয়। যেখানে বলা হয়, জাপা বিগত ৩ নির্বাচনের মতো এবারও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে'।
তবে একই দিনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রওশন এরশাদকে ফোন দেওয়া হলে তিনি একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আমি কোনো চিঠি পাঠাইনি। আমি চিঠির বিষয়ে কিছু জানি না।
মন্তব্য করুন