বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ব্যক্তিত্বের মধ্যে লেনিন অন্যতম। তিনি মানুষের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। তার বিপ্লবী মতাদর্শ ও বিপ্লবী রাজনৈতিক তৎপরতার প্রভাব হয়েছে সুদূরপ্রসারী ও বিশ্বব্যাপী। শোষণ ও বঞ্চনার পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার বিপরীতে সাম্যবাদী সমাজের লক্ষ্যে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা যে গড়ে তোলা সম্ভব, লেনিন ও তার বলশেভিক বিপ্লবী পার্টির সহযোদ্ধারা রাশিয়ায় বাস্তবে তা প্রমাণ করেছেন।
রোববার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রুশ বিপ্লব ও আন্তর্জাতিক শ্রমিকশ্রেণির নেতা লেনিনের মৃত্যু শতবর্ষে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ‘লেনিন পরবর্তী একশ বছর ও রাষ্ট্রবিপ্লবের প্রশ্ন’- শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সাইফুল হক বলেন, লেনিন রাশিয়ায় বিপ্লবের মতাদর্শিক-রাজনৈতিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সশরীরে এই বিপ্লবে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। মানব ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলির অন্যতম হচ্ছে রুশ বিপ্লব। যা শোষণ ও বৈষম্যমূলক অমানবিক পুঁজিতান্ত্রিক বিশ্বব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
তিনি বলেন, রুশ বিপ্লব শ্রমদাসত্বের অবসান ঘটিয়ে শোষণহীন সাম্যভিত্তিক নতুন এক মানবিক ও গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। মানুষে মানুষে নতুন সম্পর্ক, নতুন সভ্যতা, নতুন মূল্যবোধ, অগ্রসর নতুন সংস্কৃতির উদ্বোধন ঘটিয়েছিল। সকল শৃঙ্খল থেকে মানুষের মানবিক সত্তার মুক্তির অজুত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, রুশ বিপ্লব দুনিয়াব্যাপী সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে নতুন গতি ও সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। এর মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকার ও মুক্তির স্বপ্নও নতুন স্তরে উন্নীত হয়েছিল। রাশিয়াসহ পৃথিবীর দেশে দেশে সমাজতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের অনুশীলন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতির দিক থেকে তার ঐতিহাসিক ন্যায্যতার প্রমাণ দিয়েছে। মানবিক সমাজ হিসেবেও তার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, লেনিন পরবর্তী একশ বছরে দুনিয়ায় নানা দিক থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে সন্দেহ নেই। কিন্তু যে পর্যন্ত শোষণ ও বঞ্চনানির্ভর নিষ্ঠুর ও অমানবিক পুঁজিতান্ত্রিক-সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা বহাল আছে, ততদিন মানুষের অধিকার ও মুক্তি অর্জনে সাম্যভিত্তিক সমাজব্যবস্থার জরুরত থাকবে। এই সংগ্রামে লেনিন, তার বিপ্লবী চিন্তা ও কর্মযজ্ঞ থাকবে আলোকবর্তিকা হিসাবে। আন্তর্জাতিক শ্রমিকশ্রেণি তথা মুক্তিকামী মানুষের কাছে লেনিন থাকবেন অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে। আলোচনা সভার শুরুতেই দুই মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে লেনিনের বিপ্লবী স্মৃতির প্রতি সম্মান জানানো হয়। সভায় লেনিনের মৃত্যু শতবার্ষিকীতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি পাঠ করেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, আবু হাসান টিপু, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক প্রমুখ।
মন্তব্য করুন