আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে শক্তিশালী মার্কিন প্রতিনিধি দল গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুসন্ধানী মিশন কাজ শুরু করেছে আগেই। ইইউ ও মার্কিন প্রতিনিধিদের উপস্থিতির মধ্যেই ঢাকায় সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ফলে সৃষ্টি হয়েছে উত্তেজনা।
জানা গেছে, ঢাকায় বিদেশিদের নিজেদের শক্তি দেখাতে চায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এ জন্য তাদের আগমনের সময় টার্গেট করে আগেভাগেই আজ (বুধবার) সরকার পতনের একদফা আন্দোলন ঘোষণা করতে যাচ্ছে বিএনপি। একই দিনে বিরোধীদের মোকাবিলায় শান্তি সমাবেশ নিয়ে মাঠে থাকছে আওয়ামী লীগ।
একই দিনে দুই দলের সমাবেশ ডাকায় রাজধানীজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। নিরাপত্তার স্বার্থে ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে মোড়ে মোড়ে পুলিশ তল্লাশি করছে। অনেক ক্ষেত্রে ঢাকায় গাড়ি ঢুকতে পারছে না। এ জন্য কয়েক কিলোমিটার হেটে যেতে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, সমাবেশ ঘিরে যাতে কোনো প্রকার নাশকতা সৃষ্টি না হয় এ জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
হঠাৎ রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র কৌতূহল, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। নির্বাচন ঘিরে রাজনীতির সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। বিদেশিদের দেখাতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শক্তিপ্রদর্শন চলছে। বিএনপি ১৫ জুলাই একদফার ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দুই প্রতিনিধি দলের আগমন উপলক্ষে তারা কর্মসূচি এগিয়ে আনে।
এ বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম শফিউল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, দুপক্ষ মুখোমুখি হওয়ায় সংকট সুরাহার দিকে যাচ্ছে না। সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। সংঘাতের মাধ্যমে কোনো সমাধান আসে না। সংঘাত গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক উন্নতিকে ব্যাহত করবে। উভয়পক্ষকে রাজনৈতিক সমাধান কীভাবে হবে সেদিকে মনোযোগী হতে হবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়ে সংলাপ করতে হবে।
এদিকে সমাবেশে অংশ নিতে গতকাল রাত থেকে নয়াপল্টনে জড়ো হতে শুরু করেছে বিএনপি ও দলটির অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মৎস্যভবনসহ নয়াপল্টনের বিভিন্ন গলিতে অবস্থান নিয়েছেন।
অন্যদিকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অনুষ্ঠিত হবে আওয়ামী লীগের সমাবেশ। বিশাল জমায়েত করে রাজপথে নিজেদের ‘শক্তি’ দেখাতে চায় দলটি। পাশাপাশি জনগণ আওয়ামী লীগের পাশে আছে, সেটিও দেখাতে চায় দলটি।
মন্তব্য করুন