১০ বছর পর হঠাৎ জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার পেছনে সরকারের দূরভিসন্ধি দেখছে গণতন্ত্র মঞ্চ। জোটের নেতারা মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে বিরোধী দলগুলোর চলমান আন্দোলনকে আবারও জামায়াতি ব্র্যান্ডিংয়ের চেষ্টা করে নিজেদের দেশি-বিদেশি পক্ষগুলোকে তুষ্ট করতে চায় সরকার।
আজ রোববার ঢাকার পুরানা পল্টনের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা।
ওই সময় অসহনীয় লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট সমাধানের দাবিতে আগামী ১৯ জুন বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতন্ত্র মঞ্চ। এ ছাড়া গত ৪-৭ জুন পর্যন্ত দিনাজপুর অভিমুখে অনুষ্ঠিত রোডমার্চে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষমতাসীন দলের হামলার প্রতিবাদে গণতন্ত্র মঞ্চ আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘জামায়াতের ব্যাপারটা বিস্ময়কর। সরকার এতটাই দ্বিধান্বিত যে, কী করবে বুঝতেই পারছে না। কারণ, জামায়াতের লোকজন যখন অনুমতি চাইতে গেছে, তখন তাদের গ্রেপ্তার করা হলো। আবার দেড় ঘণ্টার মধ্যে ছেড়েও দিয়েছে। পরে সমাবেশের অনুমতিও দিয়েছে। এর চাইতে সরকারের অস্থিরতা বেশি কী দেখবেন?
‘গণতন্ত্র মঞ্চ সে রকম লড়াই করতে চায়-যেখানে সবার অধিকার নিশ্চিত হবে। এটাকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদ করা হবে না। জামায়াতকে তারা এতদিন কেন অনুমতি দেয়নি? এই প্রশ্নগুলো মানুষের মধ্যে নতুন করে দেখা দিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে এর উত্তর চাই।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক আবার বললেন—বিএনপির উসকানি ও মদদ পেয়ে জামায়াত সমাবেশ করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে- আপনি তাদের ১০ বছর পর অনুমতি (সমাবেশ) দিয়েছেন, আবার বলছেন বিএনপি তাকে উসকানি দিয়ে রাজপথে নামাচ্ছে। সরকার যে অসংলগ্ন আচরণ করছে, নানা বিষয়ে সরকারের যে অস্বস্তি—এটা তার বহিঃপ্রকাশ।’
সভা-সমাবেশ করার অধিকার সবার রয়েছে উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বিরোধী দলগুলোর চলমান আন্দোলনকে আবারও জামায়াতি ব্র্যান্ডিং দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, জামায়াতকে অগ্নিসন্ত্রাসের জন্য নামানো হয়েছে। তার মানে হচ্ছে বিরোধী দলের পুরো আন্দোলনকে আবারও জামায়াতের ব্র্যান্ডিং করে, সন্ত্রাসের ব্যান্ডিং করে সরকার তার দেশি-বিদেশি পক্ষগুলোকে তুষ্ট করতে চাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, কাজী মো. নজরুল, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভুঁইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, মাহবুব জামান কাদেরী, জেএসডির কামাল উদ্দিন পাটোয়ারি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্ণি শিখা জামালী, আকবর খানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন