কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৪, ০৫:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আওয়ামী লীগের হাত ধরেই বিশ্বের বুকে সম্মান অর্জন বাংলাদেশের

আওয়ামী লীগের হাত ধরেই বিশ্বের বুকে সম্মান অর্জন বাংলাদেশের

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। এদিন থেকেই একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে পথ চলা শুরু বাংলাদেশের। স্বাধীন হলেও একটি জাতির জন্য মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সে জন্য যা যা করা দরকার সবই করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার ও আলবদর বাহিনী। এমন অবস্থায় দেশের মানুষের সর্বোচ্চ আস্থা অর্জন করে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করা আওয়ামী লীগের ওপরই বর্তায় যুদ্ধবিধস্ত বাংলাদেশকে গড়ার দায়িত্ব। সেই সঙ্গে বিশ্বের বুকে মর্যাদাপূর্ণ এক জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে মাত্র ৩ বছরে অভাবনীয় সাফল্য দেখায় আওয়ামী লীগ।

দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধকালেও অস্থায়ী মুজিব সরকার গঠন করে স্বাধীনতাযুদ্ধকে এগিয়ে নিয়ে যায় আওয়ামী লীগ। স্বাধীন দেশ পরিচালনার জন্য দেশের জনগণের এমন একটি রাজনৈতিক দল প্রয়োজন ছিল যার প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখা যায়। আর সত্তরের নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমেই দেশের জনগণ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তাদের আস্থার দল আওয়ামী লীগ।

স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডন থেকে দিল্লিতে যাত্রা বিরতি দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দেন। দেশে ফিরেই বঙ্গবন্ধু নিজেকে দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করেন এবং এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের এক বিরাট চ্যালেঞ্জে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দেশের ভেতর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির নানা ষড়যন্ত্র ও অভ্যন্তরিন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেও বঙ্গবন্ধু সফলভাবে বাংলাদেশের পুনর্গঠনের কাজটি করেছিলেন তাঁর সততা ও অসাধারণ দেশপ্রেমের কারণে।

যুদ্ধোত্তর দেশে ব্যাপক পুনর্বাসন কর্মকাণ্ড হাতে নেন বঙ্গবন্ধু। এ জন্য সব পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিটি গঠন করা হয়। গৃহহীনদের আবাসন সুবিধা, জরুরিভিত্তিতে নগদ টাকা, খাদ্য সহায়তা, শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে আর্থিক সহায়তা, মহকুমা সদরে অভিভাবকহীন নারীদের আশ্রয় প্রদান, বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা, ধ্বংসপ্রাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন। কৃষক, কামার, কুমার, তাঁতি, জেলে প্রভৃতি পেশার মানুষদের জীবিকা নির্বাহে সহায়তা দেওয়া হয়। যাতে তারা নিজ নিজ পেশা অব্যাহত রাখতে পারেন। মজাদার বিষয় হলো তৎকালীন সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছিল বা গ্রহণ করা হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তার ভিত্তিতেই এখনো দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যুদ্ধ-পরবর্তী নাজুক অবস্থার মাঝেও দেশে ১৯৬৯-৭০ সালের তুলনায় মাসিক ৬০ ভাগ বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে মাথাপিছু আয় ২ দশমিক ৫ ভাগ ও জিডিপি ৫ দশমিক ৫ ভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য মিসর, জার্মানি, মিয়ানমার ও সুদানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রফতানি করা হয়। মাত্র সাড়ে তিন বছরে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের এ অগ্রসরমানতা ছিল অভাবনীয় ঘটনা। সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর দল আওয়ামী লীগ সোনার বাংলাদেশ গড়ার অভীষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল। সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে বঙ্গবন্ধু ১১৬টি দেশের স্বীকৃতি ও ২৭টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করেন। কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতিকে তিনি একটি কাঠামো মধ্যে এনে উন্নয়নের পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেন।

রাষ্ট্র বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও তাকে হত্যার অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করা হয় তার নেতৃত্বে যুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের উন্নয়নকে। কেননা পাকিস্তান যখন ১৬ ডিসেম্বরের আগেই দেশের রিজার্ভ শূন্য করে চলে যায়, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে এবং দেশের অধিকাংশ সড়ক, রেল ও নৌপথ বিধ্বস্ত করে যায়, তখন পাকিস্তানের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও নেতাকর্মীদের কথায় বেশ স্পষ্ট ছিল যে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হতে যাচ্ছে। কিন্তু মাত্র ৩ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নে তাদের এমন বক্তব্য থমকে যায়। এমনকি তৎকালীন সময় বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে অংশ নেয়া হেনরি কিসিঞ্জারও বাংলাদেশের এই উন্নয়নকে ভালোভাবে নেননি। আর বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অংশ হিসেবেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেষরাতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আর এর মাধ্যমে থমকে যায় একটি সদ্য স্বাধীন দেশের উন্নয়নের পথের অগ্রযাত্রা। যা আবারও গতি পায় ১৯৯৬ সালে দেশের ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পারভেজ হত্যার মূল আসামি গ্রেপ্তার

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়ে আবার প্রত্যাহার করল ইসরায়েল

ছাত্রলীগ নেতার যে কথায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আদালত 

কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

দিনাজপুরে ভুয়া সেনা সদস্য গ্রেপ্তার

কাশ্মীর ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা

অর্থ পাচারকারীরা শয়তানের মতো, এদের ধরা মুশকিল : দুদক কমিশনার

এক দিন পরেই সোনার দামে বড় পতন

জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশের নিন্দা

আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নতুন সভাপতি জিল্লুর, সম্পাদক সাইদুল

১০

কাশ্মীরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ভিডিও প্রকাশ

১১

কাশ্মীর হামলা নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের মুসলিম নেতা

১২

প্রাইম এশিয়া শিক্ষার্থী হত্যায় বৈষম্যবিরোধী নেতা রিমান্ডে 

১৩

এবার গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে পরী মণির মামলা

১৪

রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার অনুরোধ ডিএমপির

১৫

কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান

১৬

ওয়ালপ্যাড ৯জি : অত্যাধুনিক ফিচারসমৃদ্ধ ওয়ালটনের নতুন অ্যান্ড্রয়েড ট্যাব

১৭

আবাসন সংকট নিরসনসহ চার দফা দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

১৮

কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলা, দুই বিদেশিসহ তিন সন্দেহভাজন চিহ্নিত

১৯

ঘরের মাঠে লজ্জার মুখে টাইগাররা

২০
X