

নেক আমল বা ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বান্দাকে তার সওয়াব ১০ গুণ বাড়িয়ে দেন। এমনকি একটি হাদিসে এসেছে, কখনো সেই সওয়াব ২৭ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এটা বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ দয়া। তিনি যে আরহামুর রাহিমিন, তার প্রমাণ।
আর গোনাহের ক্ষেত্রে সাধারণত আমরা জানি, বান্দা একটি অন্যায় করলে তার জন্য একটি অন্যায় লেখা হয়। অর্থাৎ, একটি অন্যায়ের জন্য একটি শাস্তি তার প্রাপ্য থাকে, একাধিক থাকে না।
কিন্তু এমন একটি গোনাহ রয়েছে, যার শাস্তি হবে ১০ গুণেরও বেশি। তাহলে কী সেই গোনাহ বা অপরাধমূলক কাজ? এ সম্পর্কে হাদিসের বর্ণনাই বা কী?
এ বিষয়ে জনপ্রিয় ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে জানান, গোনাহের ক্ষেত্রে সাধারণত একটি অপরাধের জন্য একটি শাস্তি ধরা হয়। তবে, এমন একটি অপরাধ আছে, যা করলে বান্দাকে ১০ গুণ বেশি শাস্তি প্রদান করা হবে।
আহমাদুল্লাহ জানান, সেই অপরাধ প্রসঙ্গে মুসনাদে আহমদে এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, বিশুদ্ধ সূত্রে মিক্বদাদ ইবনে আসওয়াদ (রা.) হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) একবার উপস্থিত সাহাবাদের জিজ্ঞেস করলেন, যেনা করা কারোর প্রতি, এটাকে তোমরা কীভাবে দেখো? সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা) এটা তো হারাম। বড় অপরাধসমূহের একটা। তখন নবীজি (সা.) বলেন, জেনে রাখো, প্রতিবেশীর যে কোনো একজন মহিলার সঙ্গে যেনা করা অন্য দশজন মহিলার সঙ্গে যেনা করার চাইতেও বেশি জঘন্য। তিনি (সা.) আরও বলেন, প্রতিবেশীর কোনোকিছু চুরি করা অন্য ১০টি চুরির চাইতেও বেশি অপরাধের।
ইসলামি এই স্কলার বলেন, উল্লিখিত হাদিসটিতে নবীজি (সা.) প্রতিবেশীর নারীর সঙ্গে যেনা এবং চুরি এই দুটি পয়েন্ট বলেছেন। কিন্তু আমরা যদি এই দুটি পয়েন্টের সঙ্গে প্রতিবেশীর অন্যান্য বিষয়গুলোকেও মিলিয়ে নিই, তাহলে দেখা যায়, প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া, তার কোনো হক নষ্ট করা অন্য দশজনকে কষ্ট দেওয়া বা অন্য দশজনের হক নষ্ট করার চেয়েও বেশি অপরাধের।
তিনি বলেন, খোলাসা কথা হলো, প্রতিবেশীর সঙ্গে কোনো প্রকার অসদাচারণ করা, তার কোনো প্রকার হক নষ্ট করা- এটা অন্য কোনো জায়গায় একইরকম অপরাধ দশবার করার চাইতেও বেশি গোনাহের। কাজেই প্রতিবেশীর প্রতি, তার হকসমূহের প্রতি আমাদের সচেতন থাকা উচিত।
মন্তব্য করুন