কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪, ১১:২৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ইতিকাফ নামাজের নিয়ম

ইতিকাফ নামাজের নিয়ম
ইতিকাফ নামাজের নিয়ম | ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

ইসলামি শরীয়তের পরিভাষায় রমজান মাসের শেষ দশক বা অন্য কোনো সময় জাগতিক কাজকর্ম ও পরিবার-পরিজন থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে আল্লাহকে খুশি করার নিয়তে পুরুষের জন্য মসজিদে এবং নারীদের জন্য ঘরে নামাজের নির্দিষ্ট একটি স্থানে ইবাদত করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করা ও স্থির থাকাকে ইতিকাফ বলে।

ইতিকাফ আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ অবস্থান করা, স্থির থাকা, কোনো স্থানে আটকে পড়া বা আবদ্ধ হয়ে থাকা। রমজান মাস ছাড়া অন্য যেকোনো সময়ই আমলটি করা যায়। তবে রমজান মাসের সঙ্গে এর বিশেষ একটি সম্পর্ক রয়েছে।

ইতিকাফের উদ্দেশ্য : আত্মশুদ্ধির চর্চা ও আত্মার পবিত্রতা অর্জন করাসহ ইতিকাফ পালন করার মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। এ ছাড়া রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করার আরো বিশেষ একটি উদ্দেশ্য রয়েছে, তা হলো শবে কদরের তালাশ করা। এ সময় ইতিকাফ করার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে মহিমান্বিত এ রাতে আমলের সুযোগ লাভ করা যায়।

ইতিকাফের প্রকারভেদ:

সুন্নত ইতিকাফ:

রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের ইতিকাফ সুন্নতে মোয়াক্কাদা আলাল কেফায়া। অর্থাৎ মহল্লার যে কোনো একজন ইতিকাফ করলে পুরো মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে ইতিকাফ আদায় হয়ে যাবে।

কিন্তু মহল্লার একজন ব্যক্তিও যদি ইতিকাফ না করে তবে মহল্লার সবার সুন্নত পরিত্যাগের গোনাহ হবে। (দুররে মুখতার: ২/৪৪০)। রমজানের ২১ তারিখের রাত থেকে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা পর্যন্ত এই ইতিকাফের সময়।

কারণ রাসুল (সা.) প্রত্যেক বছর এই দিনগুলোতেই ইতিকাফ করতেন। এ কারণে এটাকে সুন্নত ইতিকাফ বলা হয়।

ওয়াজিব ইতিকাফ:

মান্নতের ইতিকাফ ওয়াজিব। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তারা যেন তাদের মানৎ পূর্ণ করে।’ (সূরা হজ: ২৯) তাতে কোনো শর্ত থাকুক বা না থাকুক।

যেমন- কেউ বললো, ‘আমার এই কাজ সমাধা হলে আমি ইতিকাফ করবো’, এতে যেমন ইতিকাফ ওয়াজিব হবে ঠিক তেমনই কেউ যদি বলে- ‘আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইতিকাফ করবো’, এ অবস্থাতেও ইতিকাফ করা ওয়াজিব বলে সাব্যস্ত হবে। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/২১৩, দুররে মুখতার: ২/৪৪১) সুন্নাত ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে গেলে তা কাজা করা ওয়াজিব।

নফল ইতিকাফ:

উপরোক্ত দুই প্রকার ইতিকাফ ছাড়া বাকি সব ইতিকাফ নফল। এ ইতিকাফ মানুষ যেকোনো সময় করতে পারে। অর্থাৎ কিছু সময়ের জন্য ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করা। এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যতক্ষণ চায় করতে পারে। রোজারও প্রয়োজন নেই। এমনকি যখনই মসজিদে প্রবেশ করবে নফল ইতিকাফের নিয়ত করা সুন্নত।

সর্বোত্তম ইতিকাফ:

ইতিকাফের সর্বোত্তম স্থান মসজিদুল হারাম, এরপর মসজিদে নববী, এরপর মসজিদে আকসা। এরপর জুম‘আ মসজিদ, এরপর যে মসজিদে বেশি মুসল্লি সালাত আদায় করে থাকে।

ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) বলেন, ইতিকাফ সহীহ হবে এমন মসজিদে যেখানে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাআতের সঙ্গে আদায় করা হয়। যাদের সামর্থ্য আছে তারা যেনো মসজিদে হারামে ইতিকাফ আদায় করে। এটি সওয়াবের ও জামাআতের দিক থেকে সর্বোত্তম।

ইতিকাফের শর্ত:

মুসলমান হওয়া, পাগল না হওয়া, বালেগ হওয়া, নিয়ত করা, ফরজ গোসলসহ হায়েজ নেফাছ থেকে পবিত্র হওয়া, রোজা রাখা। মসজিদে ইতিকাফ করা। ইমাম মালিক (রহঃ)-এর মতে জামে মসজিদে ইতিকাফ করা উত্তম। ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর মতে যে মসজিদে জামাআত সহকারে সালাত হয় না, সে মসজিদে ইতিকাফ জায়েজ নেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: রমজান ২০২৪
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ড্রোন ফুটেজে উঠে এলো রাইসির হেলিকপ্টারের করুণ পরিণতির দৃশ্য

রাইসির মৃত্যুতে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্টের আবেগঘন স্ট্যাটাস

ইব্রাহিম রাইসি নিহত, জরুরি বৈঠকে ইরান

বিএনপির ৩ নেতা বহিষ্কার

রাইসির জন্য প্রার্থনায় বসেছিল গোটা দেশ

মেঠোপথে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে বুনো ফুল ‘পটপটি’

ব্রাজিলের কোপার স্কোয়াডে নতুন চার মুখ

রাইসির হেলিকপ্টারের যা ঘটেছিল

দুপুরের মধ্যে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

বিচারক থেকে প্রেসিডেন্ট, কে এই রাইসি

১০

ইব্রাহিম রাইসি মারা গেছেন

১১

ইরানের প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত : রাইসি ছাড়াও যারা মারা গেলেন

১২

রাঙামাটিতে চলছে ইউপিডিএফের আধাবেলা অবরোধ

১৩

পায়ুপথে ব্রাশ দিয়ে কিশোরকে নির্যাতন করল বখাটেরা

১৪

রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত : কোনো আরোহী বেঁচে নেই

১৫

কে হবেন ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট?

১৬

হবিগঞ্জে ধান সংগ্রহের শুরুতেই হযবরল

১৭

আইপিএলে প্লে-অফে কে কার বিরুদ্ধে লড়বে?

১৮

তুর্কি ড্রোনে খোঁজ মিলল রাইসির হেলিকপ্টারের

১৯

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি বেঁচে আছেন? 

২০
X