নামাজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। মহান আল্লাহ প্রতিটা মুসলিমের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য মুসলিমদেরকে ডাকা হয়।
নামাজের জন্য এ আহ্বানকে আজান বলে। শুক্রবারে জুমার নামাজের জন্যও আজান দিয়ে আহ্বান জানানো হয়।
কোরআনের সুরা মায়িদার ৫৮ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর তোমরা যখন নামাজের জন্য ডাকো, তখন তারা তাকে হাসি-তামাশা ও খেলার জিনিস বলে নেয়।’
হজরত মোহাম্মদ (সা.) মদিনায় আজানের প্রবর্তন করেন। ইসলামে প্রথম মুয়াজ্জিন ছিলেন বিলাল ইবনে রাবাহ (রা.)। ইসলাম ধর্মে প্রতিদিন পাঁচবার নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়।
‘আল্লাহুম্মা রব্বা হাজিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাতি ওয়াস সালাতিল কায়িমাতি আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাতা ওয়াদ দারজাতার রফিআতা ওয়াবআসহু মাকামাম মাহমুদানিল্লাজি ওয়াআত্তাহু; ওয়ারজুকনা শাফাআতাহু ইয়াওমাল কিয়ামাতি, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মিআদ।’
হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বানের ও স্থায়ী প্রতিষ্ঠিত নামাজের আপনিই প্রভু। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ওয়াসিলা ও সুমহান মর্যাদা দান করুন এবং তাঁকে ওই প্রশংসিত স্থানে অধিষ্ঠিত করুন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাঁকে দিয়েছেন আর কিয়ামতের দিন তাঁর সুপারিশ আমাদের নসিব করুন; নিশ্চয়ই আপনি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না।
সকল মুসলমানকে একত্রে সমবেত করে জামাতবদ্ধভাবে নামাজ পড়ার জন্য এমন এক জিনিসের প্রয়োজন ছিল, যা শুনে বা দেখে তারা জমা হতে পারতেন। এ জন্যে তাঁরা পূর্ব থেকেই মসজিদে উপস্থিত হয়ে নামাজের অপেক্ষা করতেন।
এ মর্মে তারা এক দিন পরামর্শ করলেন; কেউ বললেন, ‘নাসারাদের ঘণ্টার মতো আমরাও ঘণ্টা ব্যবহার করব।’ কেউ কেউ বললেন, ‘বরং ইয়াহুদিদের শৃঙ্গের মতো শৃঙ্গ ব্যবহার করব।’ হযরত উমার (রাঃ) বললেন, ‘বরং নামাজের প্রতি আহ্বান করার জন্য একটি লোককে (গলি-গলি) পাঠিয়ে দিলে কেমন হয়?’
কিন্তু মহানবী (সাঃ) বললেন, “হে বিলাল! ওঠ, নামাজের জন্য আহ্বান কর।”(বুখারী ৬০৪ , মুসলিম, সহীহ)
কেউ বললেন, ‘নামাজের সময় মসজিদে একটি পতাকা উত্তোলন করা হোক। লোকেরা তা দেখে একে অপরকে নামাজের সময় জানিয়ে দেবে।’
কিন্তু মহানবী (সাঃ) এ সব পছন্দ করলেন না। (আবুদাঊদ, সুনান ৪৯৮নং) পরিশেষে তিনি একটি ঘণ্টা নির্মাণের আদেশ দিলেন। এই অবসরে আব্দুল্লাহ বিন যায়দ (রাঃ) স্বপ্নে দেখলেন, এক ব্যক্তি ঘণ্টা হাতে যাচ্ছে।
আব্দুল্লাহ বলেন, আমি তাকে বললাম, ‘হে আল্লাহর বান্দা! ঘণ্টাটি বিক্রি করবে?’ লোকটি বলল, ‘এটা নিয়ে কী করবে?’ আমি বললাম, ‘ওটা দিয়ে লোকেদেরকে নামাজের জন্য আহ্বান করব।’
লোকটি বলল, ‘আমি তোমাকে এর চাইতে উত্তম জিনিসের কথা বলে দেব না কি?’ আমি বললাম, ‘অবশ্যই।’
তখন ঐ ব্যক্তি আব্দুল্লাহকে আজান ও ইকামত শিখিয়ে দিল। পরে সকালে তিনি রসূল (সাঃ) এর কাছে উপস্থিত হয়ে স্বপ্নের কথা খুলে বললেন।
সব কিছু শুনে মহানবী (সাঃ) বললেন, “ইনশাআল্লাহ! এটি সত্য স্বপ্ন। অতএব তুমি বিলালের সঙ্গে দাঁড়াও এবং স্বপ্নে যেমন (আজান) শুনেছ ঠিক তেমনি বিলালকে শুনাও; সে ঐ সব বলে আজান দিক। কারণ, বিলালের আওয়াজ তোমার চেয়ে উচ্চ।”
মন্তব্য করুন