সিলেট নগরীর আম্বরখানায় আবুল হাসান (২৬) নামের এক প্রবাসী যুবককে অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে অপহরণকারীরা। এ সময় তার সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় অপহরণকারীরা।
এ হত্যার ঘটনায় মামলার ৪৭ দিন পর পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাতে র্যাব-৯ ও র্যাব-৩ এর যৌথ অভিযানে ঢাকার ধানমন্ডি ও সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কেএম শহিদুল ইসলাম সোহাগ।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- সিলেটের কানাইঘাটের পূর্ব কাড়াবাল্লা গ্রামের মো. আব্দুল মজিদের ছেলে মো. নাজমুল হোসেন ওরফে রায়হান (২০) ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা থানার রাজাপুর গ্রামের গোলাম কিবরিয়ার ছেলে রাজু আহমদ (১৮)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত ঈদুল আজহার পরের দিন ১৮ জুন রাতে অসুস্থ বোনকে দেখতে সিলেট আসেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর এলাকার পূর্বভাগ কলাশহর গ্রামের মৃত ইলিয়াস আলীর ছেলে আবুল হাসান। সঙ্গে ছিলেন তার চাচাতো ভাই মিনহাজ। বোনকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার কথা থাকলেও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ও গাড়িতে থাকা আরেক যাত্রী তাদের নিয়ে যান আম্বরখানাস্থ ব্রিটানিয়া হোটেলের পাশে।
সেখানে একটি ৫ম তলা ভবনের ছাদে নিয়ে তাদের কিল-ঘুষি মেরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা হয়। সেখানে এলোপাতাড়ি মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় অপহরণকারীরা। পরে অপহরণকারীরা আবুলের কাছে আরও পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ দিতে অস্বীকৃতি জানালে আবুলকে মারধর করে ও ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় আবুলকে হাসপাতালে নিলে পরদিন গত ১৯ জুন সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই খালেদ আহমদ কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে র্যাব-৯ ও র্যাব-৩ এর যৌথ দল রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার পলাতক আসামি মো. নাজমুল হোসেন ওরফে রায়হানকে গ্রেপ্তার করি। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানাধীন মজুমদারি কোনাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে একই মামলার অপর পলাতক আসামি রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে আবুল হাসানের মৃত্যুর ৫ দিন পর নগরীর কাজীটুলা মক্তবগলি এলাকার উবায়দুল হকের ছেলে রায়হান আহমদকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটক আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং তার সঙ্গে থাকা অন্য সহযোগীদের নাম-পরিচয় জানায়। পরে র্যাব অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ২ জনকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে রায়হান আহমদ কারাগারে রয়েছে।
র্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কেএম শহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, আবুল হাসানকে অপহরণ করে মুক্তিপণ না পেয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করে অপহরণকারীরা। আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। আসামিদের থানায় হস্তান্তর করে কারাগারে পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন