বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধিসহ শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে এবার সহমত জানিয়েছেন ইসলামি স্কলার মিজানুর রহমান আজহারি।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে এ-সংক্রান্ত পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
পোস্টে মিজানুর রহমান আজহারি লিখেছেন, ‘প্রজন্ম গড়ার কারিগর সম্মানিত শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
এর আগে শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি অবশ্যই মেনে নিতে হবে বলে জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
বুধবার বিকেল ৫টা ২৯ মিনিটে নিজের ফেসবুকে এ-সংক্রান্ত পোস্ট দেন তিনি।
ওই পোস্টে সারজিস আলম লিখেছেন, ‘শিক্ষকদের দুর্দশাগ্রস্ত রেখে জাতির অগ্রগতি কখনোই সম্ভব নয়। আমাদের সম্মানিত শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি অবশ্যই মেনে নিতে হবে।’
এদিকে শাহবাগ ব্লকেড ছেড়ে দিয়ে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। বুধবারের মধ্যে ৩ দাবি মানার কথা বলে শাহবাগ ব্লকেড ছেড়ে দিয়েছেন তারা। নির্ধারিত সময়ে দাবি না মানলে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাত্রার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বুধবার বিকেলে দাবি আদায়ে নতুন সময় বেঁধে দিয়ে শহীদ মিনারের দিকে চলে যান শিক্ষকরা। ব্লকেড উঠিয়ে নেওয়ার পর শাহবাগ দিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে, দুপুর ২টার দিকে শিক্ষকরা শাহবাগে অবস্থান নেন। এবার আর প্রতিশ্রুতি নয়, প্রজ্ঞাপন ছাড়া অবস্থান থেকে না ফেরার ঘোষণা দেন তারা। শহীদ মিনার থেকে শাহবাগের দিকে যাওয়ার সময় শাহবাগ থানার সামনে শিক্ষকদের আটকে দেয় পুলিশ। পরে ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে অবস্থান নেন তারা।
এর আগে বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালেই তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
শিক্ষকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— মূল বেতনের ওপর ২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাতা প্রদান, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত করা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে বৃদ্ধি করা। এসব দাবির বাস্তবায়নে এখনো সরকার প্রজ্ঞাপন জারি না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা।
এর আগে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালন করতে গেলে হাইকোর্ট মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে পড়েন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। সেখান থেকে দেওয়া আলটিমেটামে তারা জানান, বুধবার বেলা ১১টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। এ ছাড়া, দাবি মেনে না নিলে পরবর্তী ধাপে আমরণ অনশন শুরু করারও ঘোষণা দেন তারা।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করেছে; তবে এই ঘোষণা ৫ অক্টোবর প্রকাশিত হওয়ার পর শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেন। এরপর ৬ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠায়, যাতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া অন্তত দুই থেকে ৩ হাজার টাকা করা হয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তাদের মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং ১ হাজার টাকার বাড়ি ভাড়া ভাতা দেওয়া হতো, যা সাম্প্রতিক সময়ে ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আগে শিক্ষকরা বছরে দুটি উৎসব ভাতা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ হারে পেতেন; তবে গত মে মাসে বাড়ানোর পর এখন তারা এবং অন্য এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন