কুড়িগ্রামের রৌমারীতে চোর আখ্যা দিয়ে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলার পর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও ঘেরাও কর্মসূচি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা প্রশাসন ও থানার সামনে দাঁতভাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি করেন।
পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদারের কাছে দুই শিক্ষার্থীর মুক্তি, মামলা থেকে নাম প্রত্যাহার এবং অভিযুক্ত ওসি সেলিম মালিকের অপসারণ চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। দাবি মানা না হলে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ফের উপজেলা প্রশাসন এবং থানা ঘেরাও ও অনশন করা হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হবে এবং ওসির সঙ্গে কথা বলে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বলা হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন ইএনও।
পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে থানা ঘেরাও করেন। প্রায় আধাঘণ্টা থানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান করেন।
গত ৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের হরিণধরা পূর্বপাড়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী জহিরুল ইসলামের বাড়িতে চুরি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করা মামলায় দাঁতভাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
দাঁতভাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের দুই সহপাঠীকে পুলিশ অন্যায়ভাবে চুরির মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করে। ওসির অপসারণ চাই ও যথাযথ বিচার চাই। গ্রেপ্তার দুই শিক্ষার্থীর অবিলম্বে মুক্তি এবং মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রিন্স সোহেল অভিযোগ করে বলেন, পারিবারিক বিরোধের জেরে ওসি ঘুষ খেয়ে নির্দোষ শিক্ষার্থীদের ধরে এনে চুরির মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। অভিযুক্ত ওসির অপসারণ, গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে আমাদের আন্দোলন।
ইউএনও উজ্জ্বল কুমার হালদার কালবেলাকে বলেন, দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা উপজেলা প্রশাসনের সামনে অবস্থান নিয়েছিল। পরে তাদের দাবি শুনে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওসিকে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বলা হবে।
অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে রৌমারী থানার ওসি সেলিম মালিক কালবেলাকে বলেন, বাদীর এজাহার অনুযায়ী দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আন্দোলনে কাউকে কোনো ধরনের বাধা দিইনি। কিন্তু আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়েছে।
পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, শুনলাম দুদিন ধরে আন্দোলন হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সবসময় খোঁজখবর নিচ্ছি। মামলার বিষয়ে প্রয়োজনে তদন্তে যাব, সেখানে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা বা গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
মন্তব্য করুন