কুড়িগ্রামের চিলমারীতে খোলা বাজারে খাদ্যশষ্য বিক্রয়ের (ওএমএস) আওতায় সরকারি আটা বিক্রির লাইনে রাত থেকেই জমছে মানুষের ভিড়। কেউ মধ্য রাতে কেউবা ভোরে এসে দাঁড়ান লাইনে। অথচ আটা বিতরণ বা বিক্রি শুরু হয় সকাল ৯টায়। এ অপেক্ষা যেন তাদের জীবনের অনিবার্য অংশ হয়ে গেছে।
রাতভর অন্ধকারে অপেক্ষায় থাকেন নারী-পুরুষ। প্রতিদিন মাত্র ১০০ জনকে দেওয়া হয় পাঁচ কেজি আটা। যারা আগে আসতে পারেন না, তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পরও ফিরে যান খালি হাতে।
উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, চিলমারী উপজেলায় তিনজন ওএমএসের ডিলার রয়েছেন। যাদের মাধ্যমে প্রতিদিন ১ টন আটা বিক্রি করা হচ্ছে ২৪ টাকা কেজি দরে। যা বাইরে কিনতে গেলে দাম হয় ৫০ টাকা কেজি। ফলে নিম্নবিত্ত পরিবার ও হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা কম মূল্যে আটা নিতে অনেক রাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সুবিধাভোগীরা জানান, সকাল ৯টায় পাঁচ কেজি করে আটা বিক্রি করে কম দামে। তাই রাতেই আসতে হচ্ছে। তা না হলে তো সিরিয়াল পাওয়া যায় না। রাতে আসতেও সমস্যা হয়, রাস্তায় অনেক সময় কুকুর আক্রমণ করার সম্ভাবনা থাকে। তারপরেও বাধ্য হয়েই আসতে হয়। বাজারের আটা ৫০ টাকা কেজি। আর এখানে একটু অপেক্ষা করে সিরিয়াল নিতে পারলে অর্ধেক দামে আটা পাওয়া যায়।
থানাহাট ইউনিয়নের ডেমনাপাড় এলাকার তোহেরা বেগম বলেন, আমরা আটা নেওয়ার জন্য রাতে আসছি, কোনোদিন পাই, কোনো দিন পাই না।
আরেক সুবিধাভোগী আমেনা বেগম বলেন, এত রাতে আসি, খালি হাতে ফেরত গেলে পরিবারের সদস্যরা রাগ করে। এমনও হয় পরিবারের অন্য সদস্যরাও এসে দাঁড়িয়ে থাকা লাগে। রাতে তো রাস্তার সুবিধা-অসুবিধার কথা বলা যায় না।
ওএমএস ডিলার আমির হোসেন বলেন, অনেক রাতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সবাইকে আটা দেওয়া সম্ভব হয় না। কারণ আমাদের লিমিট দেওয়া আছে। বরাদ্দ বাড়ালে যারা ফেরত যায় তারাও পাবেন।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগকে কথা বলে দেখি চাহিদার পরিমাণ বাড়ানো যায় কি না।
মন্তব্য করুন