সাধারণত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রত্যেক সাধারণ ব্যক্তির নিজস্ব মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু জাতীয় দলের ক্রিকেটার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ঠিক সাধারণ বলা যায় না। প্রায়ই দেখা যায় জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সহধর্মিণীদের ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)। গত শনিবার জাতীয় দলের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের স্ত্রীর ফেসবুকে স্ট্যাটাসে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
মূলত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ দেওয়ার কারণে প্রতিবাদস্বরূপ প্রতিক্রিয়া দেন আপন দুই বোন জান্নাতুল কেফায়াত মন্ডি ও জান্নাতুল কাওসার মিষ্টি। এশিয়া কাপের দল থেকে রিয়াদকে বাদ দেওয়া অবিচার আর অবহেলা হিসেবে দাবি তাদের।
জাতীয় দলের এই দুই সিনিয়র ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের স্ত্রীর ফেসবুকে স্ট্যাটাস বিসিবি ও জাতীয় দল নির্বাচকদের খারাপভাবে প্রকাশ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিসিবি কর্মকর্তাদের দাবি, চুক্তি অনুযায়ী কোনো ক্রিকেটার বা তাদের পরিবারের কোন সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে এই ধরনের মন্তব্য করতে পারবেন না। এই শর্ত মেনেই জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা কেন্দ্রীয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের জন্য এখন থেকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের সতর্ক করবে বিসিবি।
সূত্র থেকে জানা যায যে, বিসিবি, জাতীয় দল, জাতীয় নির্বাচক প্যানেল বা খেলোয়াড়দের সুনাম ক্ষুণ্ন করে বা বিরুদ্ধে যায় প্রকাশ্যে এমন কোনো মন্তব্য করা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস ইত্যাদি দিতে পারবেন না চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটার এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। ক্রিকেটাররা চুক্তির এসব শর্ত মেনে চললেও তাদের স্ত্রীরা এই নিয়ম মানছেন না। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তারকা ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যরা প্রতিবাদী হচ্ছেন ফেসবুকে। মুশফিকের স্ত্রী মন্ডি ও রিয়াদের স্ত্রী মিষ্টির বিসিবিকে কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস দেওয়া এটিই প্রথম নয়। মুশফিক বা রিয়াদের বিরুদ্ধে যায় বোর্ড বা নির্বাচকদের এমন সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়ে আগেও স্ট্যাটাস দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব। যদিও তিনি বিসিবি, জাতীয় দল নির্বাচকদের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেননি। তবে সাকিবের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিকেটারকে ইঙ্গিত করে পরোক্ষে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তারকা ক্রিকেটারদের স্ত্রীদের এ ধরনের স্ট্যাটাস বিব্রতকর এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থি বলে অভিহিত করেন বিসিবির একাধিক পরিচালক।
নাম গোপন রাখার শর্তে বিসিবির একজন পরিচালকের দাবি, ‘যেহেতু চুক্তিতে এ সংক্রান্ত শর্ত রয়েছে এবং খেলোয়াড়রা সে সম্পর্কে অবগত তাই মৌখিকভাবে হলেও ক্রিকেটারদের এ ব্যাপারে সতর্ক করা হবে। বিষয়টি বিসিবির শৃঙ্খলা বিভাগের দায়িত্বে থাকবে।’
বিসিবির আরো একজন পরিচালক বলেন, ‘আসলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে সবাই জড়াচ্ছেন না। আমরা আশা করব, ক্রিকেটাররা তাদের পরিবারের সদস্যদের এ ব্যাপারে সচেতন করবেন। কারণ বিষয়গুলো কারও জন্যই স্বস্তিকর নয়।’
মন্তব্য করুন