বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট পদ ঘিরে তৈরি হওয়া শঙ্কা অবশেষে কাটলো। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদকে সরিয়ে তার জায়গায় আরেক সাবেক ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিসিবি সভাপতির।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় পরিচালকদের ভোটে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে নতুন সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। এই সভাতেই সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অভিজ্ঞ কোচ ও প্রশাসক নাজমুল আবেদীন ফাহিম, এবং সহ-সভাপতি হয়েছেন বর্তমান পরিচালক ফাহিম সিনহা।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। তবে বোর্ডের ভেতর থেকে ক্রমাগত চাপ ও দুর্নীতির অভিযোগে ৮ পরিচালক তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেন। এরপর গতকাল রাতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) তার কাউন্সিলর মনোনয়ন বাতিল করে এবং নতুন কাউন্সিলর হিসেবে মনোনয়ন দেয় আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে।
এই পরিবর্তনের পর আজকের পরিচালকদের ভোটে তিনি বিসিবির ১৬তম সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।
তবে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তার প্রধান উদ্দেশ্য অক্টোবরের নির্বাচন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করা, এবং এই দায়িত্ব শেষ করেই সরে দাঁড়াবেন।
ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমিনুল বলেন, ‘আমার মূল লক্ষ্য একটি স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করা এবং একটি সেরা ক্রিকেট বোর্ড গঠন করা। আমি পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী নই। সরকার আমাকে অনুরোধ করেছে, আমি রাজি হয়েছি। এখন কেবল প্রক্রিয়া অনুসরণ করার অপেক্ষা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটাই প্রথমবার আমি আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবির কাজে যুক্ত হচ্ছি। এর আগে কখনো এমন সুযোগ আসেনি। এবার যখন সুযোগ এসেছে, আমি তা গ্রহণ করেছি। তবে এই দায়িত্ব শেষ হলেই আমার ভূমিকার ইতি ঘটবে।’
বর্তমানে আইসিসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত আমিনুল জানিয়েছেন, বোর্ডে যোগদানের ব্যাপারে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তারা তাকে অনির্দিষ্টকালের ছুটি মঞ্জুর করেছে।
‘আইসিসি আমাকে বলেছে, তুমি বাংলাদেশে কাজ করতে চাইলে করতে পারো, যতদিন প্রয়োজন। ফিরে আসতে চাইলে, দরজা সবসময় খোলা। এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’
১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেওয়া আমিনুল ইসলাম ছিলেন দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান—২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে ১৪৫ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস এখনও স্মরণীয়। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৩ টেস্ট ও ৩৯ ওডিআই খেলার পর তিনি কোচিং ও প্রশাসনিক ভূমিকায় যুক্ত ছিলেন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ও আইসিসি-তে।
আগামী অক্টোবর মাসে বিসিবির নির্বাচন। তার আগ পর্যন্ত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পক্ষ থেকে আমিনুলকে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে ক্রীড়া মহলের ধারণা। তার উপস্থিতিতে বিসিবির পরিচালনাব্যবস্থায় একটি স্বচ্ছতা ও ভারসাম্য আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করছেন অনেকে।
মন্তব্য করুন