ভারতের অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শামি স্বীকার করেছেন, জীবনের এক কঠিন সময়ে তিনি আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটই তাকে ফিরিয়ে আনে সেই অন্ধকার গহ্বর থেকে। রাজত শর্মার জনপ্রিয় অনুষ্ঠান আপ কি আদালতে শামি খোলাখুলিভাবে নিজের মনের সেই দুঃসময়ের কথা তুলে ধরেন।
শামির ভাষায়, ‘ভাবনাটা এসেছিল, কিন্তু সেটি বাস্তবে হয়নি—এটাই বড় সৌভাগ্য। নইলে বিশ্বকাপটাই আমার হাতছাড়া হয়ে যেত। যে খেলাটা আমাকে এত নাম দিয়েছে, এত ভালোবাসা দিয়েছে, তার জন্যই তো সবাই আমাকে চেনে। সেটাকে ছেড়ে জীবনের ইতি টেনে দেওয়ার কোনো মানেই ছিল না। শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটের টানই আমাকে ফের জীবনে মনোযোগী করেছে।’
গত জুলাইয়ে কলকাতা হাইকোর্ট রায়ে শামিকে তাঁর বিচ্ছিন্ন স্ত্রী হাসিন জাহান ও কন্যার জন্য মাসিক ৪ লাখ টাকা ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ২০১৪ সালে হাসিনের সঙ্গে বিয়ে হয় শামির, ২০১৫ সালে জন্ম নেয় তাদের মেয়ে। তবে ২০১৮ সালে সম্পর্ক ভেঙে যায়, যখন হাসিন শামির গার্হস্থ্য নির্যাতনের অভিযোগ আনেন।
এই অভিযোগ নিয়েই শামি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ আনা হয়েছে যে হয়তো একজন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধেও এত অভিযোগ ওঠে না। অনেক সময় এমন কিছু নিয়েও বলা হয়, যা আদৌ নেই। সেটিই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর।’
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেটেও খুব একটা ভালো সময় কাটছে না শামির। ২০২৫ আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে নয় ম্যাচে মাত্র ছয় উইকেট নিয়েছেন তিনি। ভারতের অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি টেস্ট সিরিজেও দলে ছিলেন না। সর্বশেষ জাতীয় দলে খেলেছেন চলতি বছরের মার্চে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, যেখানে ভারতের শিরোপাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।
এর আগে ২০২৩ সালে ইংল্যান্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টই ছিল তার শেষ লাল বলের ম্যাচ।
এখন দেখার বিষয়, ঘরের মাঠে আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ কিংবা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সীমিত ওভারের সিরিজে শামি সুযোগ পান কি না। যদিও ব্যক্তিগত জীবন ও মাঠের সংগ্রামের মাঝেই শামির একটাই স্পষ্ট বার্তা—হাল ছাড়েননি তিনি, ক্রিকেটই তার ভরসা।
মন্তব্য করুন