২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা সুখকর ছিল না। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা শুরুর দুই ম্যাচেই বড় ব্যবধানে হেরে পড়ে গিয়েছিল সেমিফাইনালের সমীকরণ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায়। কিন্তু তারা প্রত্যাবর্তনটা করছে চ্যাম্পিয়নদের মতোই। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় জয়ের পর এবার অজিদের শিকার নেদারল্যান্ডস। ১২ বছর পর বিশ্বকাপে আসা ডাচদের আজ বড় লজ্জাই উপহার দিয়েছে ম্যাক্সওয়েল-জাম্পারা। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ৩০৯ রানে হেরে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের লজ্জাই পেতে হয়েছে তাদের।
দিল্লিতে বুধবার (২৫ অক্টোবর) অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৪০০ রান তাড়া করতে নেমে ২১ ওভারে মাত্র ৯০ রান করে গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডসের ইনিংস।
ডাচদের শতরানের আগে গুটিয়ে দেওয়ার পথে একাই ৪ উইকেট নিয়েছেন স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। ২ উইকেট নিয়েছেন মিচেল মার্শ। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউড ও প্যাট কামিন্স।
রান তাড়ায় নেমে এদিন অজি বোলারদের তোপের মুখে অধিনায়ক স্কট অ্যাডওয়ার্ডস ছাড়া ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি আর কোনো ডাচ ব্যাটার। ৫৩ রানে শুরুর ৪ ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়া দলের হাল ধরতে পঞ্চম উইকেটে ক্রিজে নেমেছিলেন অ্যাডওয়ার্ডস। তিনি ক্রিজের একপ্রান্ত আগলে রাখলেও তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে অপরপ্রান্ত।
শেষদিকে মাত্র ৪ রানের ব্যবধানে একাই ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ডাচদের ইনিংস ৯০ রানে বেঁধে দেন জাম্পা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন ওপেনার বিক্রমজিত সিং। ২২ বল মোকাবিলায় ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন অ্যাডওয়ার্ডস।
এদিন ডাচদের ৩০৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানে জয়ের নতুন রেকর্ড গড়ে অস্ট্রেলিয়া। এর আগের রেকর্ডটিও অজিদেরই দখলে ছিল। ২০১৫ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানকে ২৭৫ রানে হারিয়ে রেকর্ডটি গড়েছিল তারা। রানের হিসাবে এটি ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ জয়ও।
এর আগে টস জিতে ডেভিড ওয়ার্নার ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সেঞ্চুরিতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩৯৯ রান সংগ্রহ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ‘বুড়ো হাড়ের ভেলকি’ দেখিয়ে চলমান বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলেন বাঁহাতি এই অজি ওপেনার। আর এইডেন মার্করামকে পেছনে ফেলে প্রতিযোগিতার ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ৪০ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছান অজি অলরাউন্ডার।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে দলীয় ২৮ রানে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা ওপেনার মিচেল মার্শকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় জুটিতে ১৩২ রানের জুটি গড়েন ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ। ক্যারিয়ারের ৩১তম ফিফটিতে ৯টি চার ও ১টি ছক্কায় ৭১ রানে আউট হন স্মিথ।
পাকিস্তানের পর ডাচদের বিপক্ষেও তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছান ওয়ার্নার। মাত্র ৯১ বলে ক্যারিয়ারের ২২তম সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এই ওপেনার। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৬টি সেঞ্চুরিতে ভারতীয় কিংবদন্তি ব্যাটার শচীন টেন্ডুলকারকে ছুঁয়েছেন ওয়ার্নার। তার সামনে আছেন ৭ সেঞ্চুরি করা রোহিত শর্মা।
লোগান ভ্যান বিকের বলে সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ৯৩ বলে ১০৪ রান। এরপর ডাচ বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান হার্ডহিটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ৪০ বলে ৯টি চার ও ৮টি ছক্কায় বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন এই অজি অলরাউন্ডার। তার ঝোড়ো ইনিংসে ভর করে ৩৯৯ রানে থামে অস্ট্রেলিয়া। ডাচদের হয়ে ভ্যান বিক সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট শিকার করেন। এমন টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়া হয়নি নেদারল্যান্ডসের।
মন্তব্য করুন