গরমে হাসফাঁস, শরীরকে শীতল করতে নদীতে নেমেছিলেন এক ফুটবলারকে। কিন্তু বিধিবাম, হৃদয়বিদারক পরিণতির শিকার হতে হয়েছে তাকে। নদীতে নামার পর এক কুমির তাকে টেনে নিয়ে যায় পানির নিচে। শুধু তাই নয়, একপর্যায়ে ওই ফুটবলারের শরীরের অর্ধেক গিলে ফেলে কুমিরটি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৯ বছর বয়সী ওই ফুটবলারের নাম যিশু আলবার্তো লোপেজ অরটিজ। ডাকনাম চুচো। কোস্টারিকার গুয়ানাকাস্ট প্রদেশের রিও কানাস নদীতে নেমেছিলেন চুচু। পরে তাকে কুমির টেনে নিয়ে যায়।
সেই ফুটবলারকে চোয়ালের মধ্যে নিয়ে সাঁতার কাটছে ওই কুমিরটি। পরে গুলি করে কুমিরটিকে হত্যা করে ফুটবলারের মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। নিহত চুচুর আট ও তিন বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে।
এদিকে কুমিরটিকে হত্যা করায় বিপাকে পড়তে পারেন স্থানীয়রা। কোস্টারিকার পরিবেশ ও শক্তি মন্ত্রণালয় কুমিরের মতো সুরক্ষিত প্রাণী শিকার বা হত্যা নিষিদ্ধ করেছে। যদিও সর্বশেষ ঘটনায় এখনো স্থানীয়দের ওপর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় পুলিশের দাবি, কুমিরটির মুখ থেকে মরদেহটি বের করতে বন্যপ্রাণী আইন মেনেছেন তারা। একটি বিবৃতিতে তারা জানায়, এটি স্পষ্ট, কুমিরটির কোনো ক্ষতি না করে মৃত ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করা সম্ভব ছিল না। এরপরও তারা চেষ্টা করেছে। না পেরে অনেকটা বাধ্য হয়ে কুমিরটিকে গুলি করে তারা।
লোপেজ মূলত অপেশাদার দল দেপোর্তিভো রিও কানাসের একজন ফুটবলার ছিলেন। তার মৃত্যু বিপর্যস্ত তার পরিবার। শেষকৃত্যের খরচ জোগাড়ে জনসাধারণের কাছে সাহায্যে চাইতে হচ্ছে তার পরিবারকে। তার দলের ম্যানেজার এই অর্থ সংগ্রহের তদারকি করছেন।
লোপেজের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছে ক্লাব কৃর্তপক্ষ। এ ছাড়া শোকবার্তা দিচ্ছেন ক্লাবটির সমর্থকরা। যদি কুমিরের আক্রমণে নিহত হওয়ার ঘটনা কোস্টারিকায় নতুন নয়। এর আগে গত নভেম্বরে নদীতে মাছ শিকারের সময় ১২ ফুট লম্বার একটি কুমিরের আক্রমণে মারা যায় জুলিও নামের আট বছরের এক বালক।
বিভিন্ন দেশে কুমিরের আক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে। গত জুলাইয়ে ইন্দোনেশিয়ায় নদীতে কাপড় ধোয়ার সময় কুমিরের আক্রমণে মারা যায় ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী। এ ছাড়া মালেয়েশিয়ায় নিখোঁজ এক কৃষকের মরদেহ পাওয়া যায় ১৪ ফুট লম্বার এক কুমিরের পেটে। আর কম্বোডিয়ায় চলতি বছরের শুরু দিকে ঘেরে পড়ে প্রায় ৪০টি কুমিরের আক্রমণে মারা যান একজন বয়স্ক ব্যক্তি।
মন্তব্য করুন