নারী ফুটবলে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দুই দলের অবস্থান দুই মেরুতে। একদল বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচ জিতেনি, আরেকদলে আছে সর্বকালের অন্যতম সেরা নারী ফুটবলার। বিপরীত অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও আজ আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল ফুটবল দলের অবস্থান এক মেরুতে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মতো বৈশ্বিক ফুটবলের বড় আসর থেকে বিদায় নিতে হয়েছে সেলেসাওদেরও। পুঁচকে জ্যামাইকার সাথে গোলশূন্য ড্র নিশ্চিত করেছে ব্রাজিলের বিদায়।
ব্রাজিল নারী দলের পরিচিতি আছে আক্রমাণাত্মক ফুটবল উপহার দেওয়ার জন্য। কিন্তু আজ আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়েও লাভ হলো না ব্রাজিলের। খর্বশক্তির দল জ্যামাইকার সঙ্গে ড্র করে চলমান নারী ফুটবল বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে সেলেসাওদের। ঘণ্টাখানেক আগে সুইডেনের হাতে বিদায় হয়েছে আর্জেন্টিনার। এবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মতো করেই বাড়ির পথ ধরল ব্রাজিল।
পরের রাউন্ডে যেতে হলে আজ (বুধবার) অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ম্যাচটিতে জিততেই হতো ব্রাজিলকে। অন্যদিকে হার এড়ালেই পরের পর্ব নিশ্চিত জ্যামাইকার জন্য। এমন সমীকরণের মুখে ব্রাজিল ফিরিয়ে আনে নারী ফুটবলের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় মার্তাকে। নারী এবং পুরুষ মিলিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল যার দখলে। কিন্তু এদিন জ্যামাইকার জমাট রক্ষণের সামনে অসহায় ছিলেন এই ফরোয়ার্ডও।
একের পর এক আক্রমণে জ্যামাইকার রক্ষণকে প্রতি মুহূর্তে কাঁপিয়েছে ব্রাজিল। কিন্তু নিজেদের সেই আক্রমণগুলোকে পরিণতি দিতে পারেনি। অন্যদিকে এদিন জ্যামাইকার লক্ষ্যই ছিল যে কোনোভাবে ব্রাজিলকে ঠেকিয়ে দেওয়ার। তাই নিজেরা সুযোগ তৈরির বদলে ব্রাজিলের আক্রমণের সামনে ‘বাস পার্কিং’ কৌশল গ্রহণ করে তারা। এদিন প্রথমার্ধ শেষে ৭৬ শতাংশ বলের দখল রেখে ১১টি শট নিয়ে ৬টিই লক্ষ্যে রাখে ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধেও এ চিত্র বদলায়নি। আক্রমণের পর আক্রমণে নাভিশ্বাস উঠেছে জ্যামাইকার। কিন্তু এরপরও জালে বল ঢুকতে দেয়নি তারা। ম্যাচ শেষ হওয়ার ৯ মিনিট আগে ব্রাজিল তুলে নেয় সর্বকালের অন্যতম সেরা নারী ফুটবলারদের একজন মার্তাকে। এ সময় একই সঙ্গে তিনটি পরিবর্তন আনে, কিন্তু কোনো কিছুই কাজে আসেনি।
ম্যাচে ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় সুযোগ এসেছিল ৭৯ মিনিটে। মিডফিল্ডার লুয়ানার ক্রসে হেড করেছিলেন জ্যামাইকান ডিফেন্ডার অ্যালিসন সোয়াবি। আত্মঘাতী গোলটা পেয়েই যেতে পারত ব্রাজিল। শেষ সময়ে ত্রাতা বনে যান জ্যামাইকার গোলকিপার রেবেকা স্পেনসার।
পুরো ম্যাচেই দারুণ ছিলেন জ্যামাইকার গোলকিপার। ৭টি বড় সেভ করে ব্রাজিলকে আটকে রাখার কৃতিত্ব ছিল তারই। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র-তেই শেষ হয়েছে দুই দলের লড়াই। আর তাতেই নিশ্চিত হলো ব্রাজিলের ঘরে ফেরা।
গ্রুপপর্বের ম্যাচ শেষে ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে বিদায় নিয়েছে ব্রাজিল। এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে দ্বিতীয় হয়ে নকআউট পর্বে যাচ্ছে জ্যামাইকা। গ্রুপসেরা ফ্রান্স ৩ ম্যাচে পেয়েছে ৭ পয়েন্ট।
মন্তব্য করুন