মাত্র ৩১ বছর বয়সেই ইউরোপিয়ান ফুটবলকে বিদায় বলে সৌদিতে পা রেখেছেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার ব্রাজিলের নেইমার জুনিয়র। দুই বছরের চুক্তিতে সৌদি ক্লাব আল হিলালে যোগ দিয়েছেন পিএসজি ও বার্সেলোনার সাবেক এই খেলোয়াড়। শুক্রবার সৌদি আরবের রিয়াদে পা রাখেন তিনি। এ সময় তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে শুভেচ্ছা জানান আল হিলালের কর্মকর্তারা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা ট্রাউজার্স ও টি-শার্টে হাসতে হাসতে বিমানবন্দরের একটি গেট দিয়ে ঢুকছেন এই সেলেসাও তারকা। এ সময় তার কাঁধে আল হিলালের স্কার্ফও ঝুলতে দেখা যায়।
আবার এদিকে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, নেইমারকে বরণের জন্য আলাদা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে আল হিলাল। রিয়াদের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে নেইমারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের ফুটবলার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেবে সৌদি ক্লাবটি। অনেকটা রক তারকার মতো করেই তাকে অভ্যর্থনা জানানো হবে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আল হিলালের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নেইমারের সঙ্গে মানানসই, এমন বড় পার্টির আয়োজন করব আমরা।
তবে নেইমারকে বরণের চেয়েও আলোচনা চলছে নেইমার যে উড়োজাহাজে প্যারিস থেকে সৌদি আরবে গেছেন, সেই উড়োজাহাজ নিয়েও। এএফপি জানায়, এটি পৃথিবীর অন্যতম বিলাসবহুল উড়োজাহাজগুলোর একটি, যার মালিক প্রিন্স আলওয়ালেদ বিন তালাল। আলওয়ালেদ বিন তালাল একজন সৌদি বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী। তিনি দেশটির প্রথম বাদশাহ আবদুল আজিজের নাতি। তাকে আরবের ওয়ারেন বাফেট নামেও ডাকা হয়।
বোয়িং ৭৪৭ মডেলের উড়োজাহাজটি সম্পর্কে উড়োজাহাজ নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট অ্যারোফ্লাপ জানিয়েছে, বোয়িং ৭৪৭ মডেলের মধ্যে এটি সবচেয়ে বিলাসবহুল। দাম প্রায় ২০ কোটি ১১ লাখ ৯৫ হাজার ডলার। তবে দাম নিয়ে মতভেদ আছে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কার দাবি, এই উড়োজাহাজের দাম ৫০ কোটি ইউরোর কম হবে না।
ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, ব্রাজিলিয়ান মুদ্রায় এই উড়োজাহাজের দাম প্রায় ১ বিলিয়ন রিয়েল এবং ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের মধ্যে এটি অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত দিক থেকে সবচেয়ে বড়। ভেতরে ২টি ফ্লোর মিলিয়ে প্রায় ৪০০ যাত্রী বহন করতে পারে এই উড়োজাহাজ।
আর এই উড়োজাহাজের প্রধান কক্ষটি সৌদি আরবের প্রিন্সরা নিজেদের উপদেষ্টা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বেঠকের জন্য ব্যবহার করেন বলে জানায় গ্লোবো। প্রধান কক্ষটিতে রয়েছে চামড়ার সোফার সঙ্গে বিলাসবহুল মোড়ক এবং দামি কাঠের টেবিল। ঝলমলে আলোর ব্যবস্থাও আছে। এ উড়োজাহাজের ভেতরে একটি বড় বৈঠককক্ষও আছে, যেখানে আছে অনেক বড় একটি টেবিল। চাইলে এই কক্ষকে ডাইনিং রুমেও পরিণত করা যায়। সাধারণ যাত্রীদের বসার আসনও চামড়ায় মোড়ানো এবং তিনটি সারিতে দুটি করে আসন বসানো হয়েছে উড়োজাহাজে।
উড়োজাহাজটির প্রধান কক্ষটিকে বলা হয় ‘বসেস রুম’। এই কক্ষের মধ্যে সৌদি প্রিন্সের জন্য একটি সিংহাসন বসানো হয়েছে। এ ছাড়া এক্সিকিউটিভ লাউঞ্জ, রয়্যাল লাউঞ্জ, কনফারেন্স রুম এবং বিলাসবহুল শোয়ার কক্ষ আছে এই উড়োজাহাজে।
এদিকে রাজকীয় বিমানে আসার পাশাপাশি আল হিলালে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন ধরনের সুবিধাও পাচ্ছেন নেইমার। নেইমারের জন্য থাকছে ২৫ কক্ষের একটি বাড়ি, ৮টি বিলাসবহুল গাড়ি ও সার্বক্ষণিক একজন গাড়িচালক । সব সময় তার জন্য একটি ব্যক্তিগত বিমানও থাকবে, যা নেইমার ও তার পরিবার ব্যবহার করতে পারবে।
মন্তব্য করুন