স্প্যানিশদের বিপক্ষে নাটকীয় জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো উয়েফা নেশন্স লিগের শিরোপা ঘরে তুলল পর্তুগাল। আর সেই জয়ের মুহূর্তে চোখের জল আর আবেগের বিস্ফোরণে ভেসে গেলেন পর্তুগিজ ফুটবল রাজপুত্র ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
৪০ বছর বয়সে এসেও দেশের জার্সিতে এমন এক অর্জন যে তাকে ক্লাব ফুটবলের সব সাফল্যের চেয়েও বড় মনে হচ্ছে, সেটাই নিজের মুখে স্বীকার করলেন পাঁচবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী এই তারকা।
রোববার রাতে স্পেনের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করা ফাইনালে দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদোর করা ১৩৮তম আন্তর্জাতিক গোলেই ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। মাঠ ছেড়ে বেঞ্চে বসেই ৫-৪ ব্যবধানে টাইব্রেকারের জয় দেখেন তিনি—আর সেই জয়ের সঙ্গী হয় আবেগ আর চোখের জল।
‘কী এক আনন্দ! এই প্রজন্মের জন্য, আমাদের পরিবারগুলোর জন্য, আমার স্ত্রী, সন্তান, ভাই এবং বন্ধুদের জন্য,’ ম্যাচ শেষে স্পোর্ট টিভিকে বলেন রোনালদো।
‘আমি অনেক ক্লাব ট্রফি জিতেছি, কিন্তু দেশের জন্য জেতার চেয়ে বড় কিছু নেই। এটাই আসল গর্ব, আসল আনন্দ—এটাই দায়িত্ব পালন।’
এ নিয়ে দেশের হয়ে তিনটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতলেন রোনালদো—২০১৬ ইউরো, ২০১৯ নেশনস লিগ ও এবার ২০২৫ সালের নেশনস লিগ। ২২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষপ্রান্তে এসেও দেশপ্রেমে কোনো ঘাটতি নেই তার।
‘পর্তুগালের নাম এলেই হৃদয়ে একটা অন্যরকম অনুভূতি আসে,’ বলেন তিনি।
‘এই প্রজন্মের অধিনায়ক হতে পারা আমার জন্য গর্বের। জাতীয় দলের হয়ে ট্রফি জেতা মানেই শিখরে পৌঁছানো।’
আল নাসরের হয়ে খেললেও আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই বলে আগেই জানিয়েছেন রোনালদো। যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় এই টুর্নামেন্টে খেলার জন্য বিভিন্ন ক্লাব থেকে প্রস্তাব এলেও আপাতত বিশ্রাম ও পুনরুদ্ধারেই মনোযোগ দিচ্ছেন তিনি।
এমনকি ইনজুরির মধ্যেও ফাইনালে খেলেছেন দেশকে ট্রফি এনে দেওয়ার জেদে। ‘ওয়ার্মআপ থেকেই ব্যথা অনুভব করছিলাম। আমি জানতাম শারীরিকভাবে ভালো নেই। কিন্তু দেশের জন্য খেলা—যদি পা ভেঙেও যেত, তবুও খেলতাম,’ বললেন রোনালদো।
‘আমরা ছোট একটি জাতি, কিন্তু আমাদের স্বপ্ন বিশাল। জাতীয় দলের জন্য সবকিছু নিংড়ে দিতে হয়।’
রোনালদোর এই জয়, এই কান্না, এবং দেশের জন্য এই আত্মত্যাগ ফুটবল বিশ্বের জন্য এক অনুপ্রেরণার গল্প—যেখানে বয়স কেবল একটি সংখ্যা, আর দেশপ্রেম থাকে হৃদয়ের গভীরে গাঁথা।
মন্তব্য করুন