শেষ মুহূর্তের এক নাটকীয় গোল উৎসবে আবারও চেনা চেহারায় ফিরল রিয়াল মাদ্রিদ। ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ৩-২ গোলে জয় পেয়েছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ম্যাচের রোমাঞ্চকর ক্লাইম্যাক্সে বাজিমাত করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে—তার দুর্দান্ত বাইসাইকেল কিক গোলে নিশ্চিত হয়েছে রিয়ালের সেমিফাইনাল।
নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ৭৬ হাজারের বেশি দর্শকের সামনে রিয়াল প্রথমার্ধেই এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। দশম মিনিটে তরুণ গনজালো গার্সিয়া এবং বিশ মিনিটে ফ্রান গার্সিয়ার গোলে এগিয়ে যায় স্প্যানিশরা। তবে আসল নাটক জমে ম্যাচের অন্তিম দশ মিনিটে।
দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে ম্যাক্সিমিলিয়ান বায়ার এক গোল ফিরিয়ে আনেন ডর্টমুন্ডের জন্য। কিন্তু মাত্র এক মিনিট পরই বদলি হিসেবে নামা এমবাপ্পে যেন আকাশ থেকে পড়লেন—এক অসাধারণ বাইসাইকেল কিকে ফের ব্যবধান বাড়িয়ে দেন ৩-১ করে। এরপর পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরান সেরহু গিরাসি, যখন রিয়ালের ডিফেন্ডার ডিন হুইসেন লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মার্সেল সাবিটজারের এক নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া, রক্ষা করেন রিয়ালের জয়।
ম্যাচশেষে রিয়াল কোচ জাবি আলোনসো বলেন, ‘৮০ মিনিট আমরা দারুণ খেলেছি। তবে শেষ দশ মিনিটে একটু গড়বড় করে ফেলেছিলাম। ভাগ্য ভালো, তার চেয়েও খারাপ কিছু হয়নি।’
তবে এমবাপ্পের আগেই আলো কেড়ে নিয়েছেন আরেক তরুণ, ২১ বছর বয়সী গনজালো গার্সিয়া। লা লিগায় মাত্র ৫ ম্যাচ খেলা এই তরুণ এবার ক্লাব বিশ্বকাপে নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করছেন দারুণভাবে। এবারের টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ৪ গোল করে যৌথভাবে শীর্ষে আছেন তিনি।
এদিকে, এই জয়ের ফলে সেমিফাইনালে পিএসজির মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। এমবাপ্পের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে এই লড়াই নিঃসন্দেহে বাড়তি আবেগের, বাড়তি উত্তাপের। অন্য সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে চেলসি ও ফ্লুমিনেন্স।
ম্যাচ শুরুর আগে লিভারপুল তারকা দিয়েগো জোতা ও তার ভাইয়ের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সম্প্রতি এক সড়ক দুর্ঘটনায় দুজনই প্রাণ হারিয়েছেন, যার ছায়া ম্যাচের আবহেও অনুভূত হয়েছে।
এই জয় শুধু ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের টিকিটই নয়, রিয়ালের জন্য যেন ভবিষ্যতের সম্ভাবনার জানালাও খুলে দিয়েছে—বিশেষ করে গনজালো গার্সিয়ার উত্থান আর এমবাপ্পের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের গল্পে।
মন্তব্য করুন