দুই দশকের ঝলমলে ক্যারিয়ার, ৩৬টি শিরোপা, একটি বিশ্বকাপ আর এক অবিস্মরণীয় যুগের অংশীদারত্ব। অবশেষে সময় হলো সেই বিদায়ের, যেটি দীর্ঘদিন ধরেই আঁচ করা হচ্ছিল। লিওনেল মেসির দীর্ঘদিনের সঙ্গী, স্প্যানিশ মিডফিল্ড মাস্ট্রো সার্জিও বুসকেটস ঘোষণা দিলেন, চলতি এমএলএস মৌসুম শেষে ঝুলিয়ে রাখছেন বুট।
‘সময় এসেছে বিদায় বলার। আমি খুশি, গর্বিত আর কৃতজ্ঞ হয়ে বিদায় নিচ্ছি,’—নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এক আবেগঘন ভিডিওবার্তায় বলেন ৩৭ বছর বয়সী বুসকেটস।
২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে বার্সেলোনার জার্সিতে অভিষেকের পর থেকে প্রায় পুরো ক্যারিয়ারই কেটেছে কাতালান জায়ান্টদের সঙ্গে। ছিলেন পেপ গার্দিওলার স্বর্ণযুগের মূল স্তম্ভ। প্রচলিত ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারদের ধারা বদলে দিয়েছিলেন তিনি, যে কারণে হুয়ান রোমান রিকুয়েলমে একসময় মন্তব্য করেছিলেন—‘বুসকেটস বিশ্ব ফুটবলকেই বিভ্রান্ত করেছে।’
বার্সেলোনার হয়ে জিতেছেন ৯টি লা লিগা, ৩টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, ৩টি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপসহ অসংখ্য শিরোপা। স্পেন জাতীয় দলের জার্সিতে সবচেয়ে বড় অর্জন ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ জয়, যার দুই বছর পর জিতেছেন ইউরো শিরোপাও।
ক্যাম্প ন্যুর সেই স্মৃতিগুলো মনে করেই বুসকেটস বলেন, ‘আমি শৈশবের স্বপ্ন পূরণ করেছি। প্রিয় জার্সি গায়ে শত শত ম্যাচ খেলেছি, অসংখ্য শিরোপা জিতেছি। ক্যাম্প ন্যুতে যেসব মুহূর্ত কাটিয়েছি, সেগুলো চিরকাল আমার সঙ্গে থাকবে।’
২০২৩ সালে ইউরোপীয় অধ্যায় শেষ করে বুসকেটস যোগ দেন ইন্টার মায়ামিতে, যেখানে আবারও জুটি বাঁধেন প্রিয় সতীর্থ মেসির সঙ্গে। সেখানেই ঘরে তোলেন লিগস কাপ—ক্লাবের ইতিহাসের প্রথম শিরোপা। ক্লাব ও সতীর্থদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি তিনি— ‘ইন্টার মায়ামিকে ধন্যবাদ আমাকে নতুন অভিজ্ঞতার সুযোগ দেওয়ার জন্য। সতীর্থ, স্টাফ, ভক্ত—সবাইকে কৃতজ্ঞতা। তোমাদের কারণে এই অধ্যায় আমার কাছে অনন্য।’
৮০০-এর বেশি ম্যাচ, প্রায় ২০ বছরের পথচলা আর অনন্য সব অর্জনের পর বুসকেটসের ঘোষণা নিশ্চিতভাবেই ফুটবল বিশ্বে এক যুগের অবসান। এখন প্রশ্ন একটাই—শেষ মৌসুমে মেসির পাশে দাঁড়িয়ে আরেকটি শিরোপা জিতেই কি বিদায় বলবেন তিনি?
মন্তব্য করুন