

বাংলাদেশ ফুটবলে আবারও দুঃসংবাদ। একের পর এক ক্লাবের ওপর ফিফার নিষেধাজ্ঞা নামছে, এবার সেই তালিকায় যোগ হলো দেশের ঐতিহ্যবাহী দল ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাবটির খেলোয়াড় নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২২-২৩ মৌসুমে। ওই সময় মোহামেডানের জার্সি গায়ে খেলেছিলেন ইরানি ফুটবলার মাইসেম শাহ জাদেহ। চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক না পাওয়ায় তিনি ফিফার কাছে অভিযোগ জানান। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি সত্য প্রমাণিত হয় এবং ফিফা ক্লাবটির ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে মোহামেডান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফুটবলে নতুন কোনো খেলোয়াড় নিবন্ধন করতে পারবে না—যতদিন না তারা মাইসেমের বকেয়া পরিশোধ করছে।
বসুন্ধরা কিংস ও ফকিরেরপুল ইয়ংমেনসের পর এবার মোহামেডানও একই সমস্যায় পড়ল। অথচ ঠিক কয়েক মাস আগেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ট্রফি হাতে উল্লাস করেছিল এই ক্লাব। সেই আনন্দ এখন পরিণত হয়েছে প্রশাসনিক সংকটে।
ফিফা পাঠানো চিঠিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—‘মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এখনো মাইসেম শাহ জাদেহের আর্থিক বকেয়া পরিশোধ করেনি। তাই বকেয়া পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের খেলোয়াড় নিবন্ধন নিষিদ্ধ থাকবে।’
বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে মোহামেডান শুধু একটি ক্লাব নয়, বরং এক আবেগের নাম। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাঠের সাফল্যের পাশাপাশি প্রশাসনিক অদক্ষতা ও আর্থিক বিশৃঙ্খলাও যেন ছায়া ফেলেছে ঐতিহ্যের ওপর।
এখন প্রশ্ন একটাই—বকেয়া পরিশোধ করে কত দ্রুত তারা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে?
কারণ এই নিষেধাজ্ঞা যতদিন থাকবে, নতুন মৌসুমে দল গঠন থেকে শুরু করে খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনা—সবই থমকে যাবে।
মোহামেডান কি পারবে নিজেদের পুরোনো সম্মান ফিরিয়ে আনতে, নাকি প্রশাসনিক ভুলে আরও একবার ইতিহাস হারাবে—সেটাই এখন সময়ের অপেক্ষা।
মন্তব্য করুন