কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৮ এএম
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

৫৩ বছর পরও স্বীকৃতি নেই, শহীদ কন্যার পাশে ডিসি

শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কন্যার পাশে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক । ছবি: ‍কালবেলা
শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কন্যার পাশে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক । ছবি: ‍কালবেলা

বিজয় দিবসের আগের দিন সুবিধাবঞ্চিত এক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কন্যার পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।

শহীদ এএসআই আব্দুল লতিফ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সিলেটের গোয়াইনঘাট থানায় কর্মরত ছিলেন। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হামলায় তিনি ১৯৭১ সালের ২৭ জুন শহীদ হন। তার নাম সিলেট পুলিশ লাইনের স্মৃতিস্তম্ভে অন্তর্ভুক্ত থাকলেও দীর্ঘ ৫৩ বছরেও তার পরিবার মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।

শহীদ এএসআই আব্দুল লতিফের কন্যা শামীমা বেগম জানান, অজানা কারণে তারা কখনোই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য নির্ধারিত সরকারি সুবিধা পাননি। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মহানগরের চকবাজার থানার পাঁচলাইশ এলাকার বাদুরতলা জঙ্গিশাহ এলাকায় বসবাস করছেন।

শামীমা বেগমের স্বামী ২০১৬ সালে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে মারা যান। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত শামীমা গত মাসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। এতে পরিবারের আর্থিক সংকট আরও প্রকট হয়ে ওঠে।

তার বড় ছেলে মিজানুর রহমান টিপু একটি ছোট দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে তিনি চরম বিপাকে পড়েন।

এমন অবস্থায় সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) শামীমা বেগম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

জেলা প্রশাসক সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে নিয়ে রাউজান উপজেলায় পূর্বনির্ধারিত আইন-শৃঙ্ঙ্খলা রক্ষা বিষয়ক যৌথ মহড়া ও মতবিনিময় সভা নিয়ে প্রচন্ড ব্যস্ততার মধ্যেও জেলা প্রশাসক দীর্ঘ সময় ধরে তার কার্যালয়ে বসে শামীমা বেগমের দুরবস্থার কথা মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে তার চিকিৎসার জন্য নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিজয় দিবসের আগের দিন একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমার সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও আমি সর্বোচ্চটা দিয়ে তাদের পাশে থাকতে চাই।’

ডিসির সহায়তায় আবেগাপ্লুত শামীমা বেগম বলেন, ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার হিসেবে আমার বাবার মুক্তিযোদ্ধার সনদ, শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি এবং পুলিশ ফান্ডসহ আনুষঙ্গিক সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে ডিসি স্যারের সহায়তা চেয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।”

শহীদ এএসআই আব্দুল লতিফের নাতি মিজানুর রহমান টিপু বলেন, ‘আমরা সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় একটি ঘর পাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। জেলা প্রশাসক স্যার বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।’

বিজয় দিবসের প্রাক্কালে একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসকের এই মানবিক উদ্যোগ স্থানীয় মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাত দিন ধরে নিখোঁজ এনসিপি নেতার বাবা উদ্ধার

মহান বিজয় দিবসে পুলিশের ট্রাফিক নির্দেশনা, যে পথ এড়িয়ে চলবেন

শাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা

১৬ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন

মহান বিজয় দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন

ম্যাচ চলাকালে প্রকাশ্যে খেলোয়াড়কে খুন

জানা গেল আইপিএলে মুস্তাফিজের সম্ভাব্য গন্তব্য

দেশ ও জাতির কল্যাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান

আইপিএলের নিলাম আজ: কোন দলের হাতে কত টাকা আছে

১০

বাংলাদেশকে নিয়ে সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কা

১১

শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে আটক

১২

‘যেন-তেন নির্বাচন হলে বর্তমান প্রজন্ম সেটা গ্রহণ করবে না’

১৩

সুপ্রিম কোর্টের ক্যান্টিনে আগুন

১৪

জয়-পরাজয়ের ঊর্ধ্বে জনগণের অধিকার : ইশরাক

১৫

ঝুট ও ফোমের গুদামে ভয়াবহ আগুন

১৬

বিজয়ের ইতিহাসে মানুষের শক্তি, প্রকৌশলীর ভূমিকা ও জাতীয়তাবাদী চেতনা

১৭

৫৩ বছর পরও স্বীকৃতি নেই, শহীদ কন্যার পাশে ডিসি

১৮

পদোন্নতি দিতে সুপারসিড করা হয় ৫ কর্মকর্তাকে / মধ্যরাতে আদেশে কমিশনার হলেন ৮ শুল্ক কর্মকর্তা

১৯

হাদিকে গুলি : ফয়সাল করিমের এক সহযোগী গ্রেপ্তার

২০
X