স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আনচেলত্তির স্বপ্নের ফাইনালে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ কে?

কার্লো আনচেলত্তি। ছবি: সংগৃহীত
কার্লো আনচেলত্তি। ছবি: সংগৃহীত

ক্লাব ফুটবলে তিনি জিতেছেন প্রায় সবকিছু। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী, ইউরোপের পাঁচটি বড় লিগেই সাফল্য পাওয়া একমাত্র কোচ। কিন্তু কার্লো আনচেলত্তির হৃদয়ে এখন অন্য রকম এক স্বপ্ন—ব্রাজিলকে ২৪ বছরের শিরোপা খরা থেকে মুক্ত করা, আর হয়তো নিজের জন্মভূমি ইতালির বিপক্ষে বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলতে নামা।

২০২৪ সালে রিয়াল মাদ্রিদকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর পর কেউ ভাবেনি, তিনি হঠাৎই ক্লাব ফুটবল ছেড়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পা রাখবেন। কিন্তু আনচেলত্তি নিজেই বলেছিলেন, ‘ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব পাওয়া এমন এক সুযোগ যা আমি ফিরিয়ে দিতে পারিনি। এই দেশের ফুটবলের উন্মাদনা অন্য কিছুর সঙ্গে তুলনাই চলে না—ব্রাজিল খেললে পুরো দেশ থেমে যায়।’

২০২৪ সালের মাঝামাঝি আনচেলত্তির আগমনে শুরু হয় নতুন এক অধ্যায়। ২০২৫ সালের জুনে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের একমাত্র গোলে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে ব্রাজিল। প্রথম চার ম্যাচে দুই জয়, এক ড্র, এক হার—সংখ্যা যত না বলে, তারচেয়ে বেশি বলে তাদের পরিবর্তনের গল্প। শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা, এবং নিয়ন্ত্রণ—আনচেলত্তির ব্রাজিল খেলছে হিসেবি ফুটবল, যেখানে সৌন্দর্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারসাম্য।

‘আমরা জিততে এসেছি, লুকাচ্ছি না,’ স্পষ্ট স্বরে বলেছিলেন তিনি এক সাক্ষাৎকারে।

‘২৪ বছর শিরোপা না পাওয়াটা এক ধরনের ভার। আশা করি, ২০২৬–এ সেই ভার শেষ হবে।’

তবে তার দলে জায়গা পাওয়া নিয়েও আলোচনা কম হয়নি। ইনজুরির কারণে নেইমারের অনুপস্থিতি তো আছেই, সঙ্গে বিশ্রামে ছিলেন ভিনিসিয়ুস ও রদ্রিগোও। আনচেলত্তির যুক্তি ছিল সহজ, ‘খ্যাতির আগে দরকার ফর্ম ও ভারসাম্য।’ তাই যোগ হয়েছে নতুন মুখ—কায়ো হেনরিক, কায়ো জর্জদের মতো তরুণরা, যাদের ওপর তার বিশ্বাস ভবিষ্যতের বিনিয়োগ।

অবশ্য সবাই তার নিয়োগে খুশি নন। সাবেক গোলরক্ষক ও কোচ এমারসন লেও একে “ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের ব্যর্থতার প্রতিফলন” বলেছিলেন, যুক্তি দিয়েছিলেন—“রিয়াল মাদ্রিদ কোচ করা এক বিষয়, ব্রাজিলের কোচ হওয়া একদম অন্য। এখানে এক গোটা জাতি বিচার করে।”

কিন্তু আনচেলত্তি চাপের সঙ্গে লড়াই জানেন। তিনি বলেন, “আমি মনোযোগ দিই প্রস্তুতি, ঐক্য আর বিশ্বাসে। বিশ্বকাপ হবে কঠিন, কিন্তু লক্ষ্য একটাই—ব্রাজিলকে আবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করা।”

সবশেষে যখন তার কাছে জানতে চাওয়া হয় স্বপ্নের ফাইনালের কথা, আনচেলত্তির মুখে ঝরে পড়ে নরম হাসি—“ব্রাজিল বনাম ইতালি—এটা আবেগের দিক থেকে আমার কাছে সবচেয়ে সুন্দর ফাইনাল হবে।”

চলতি শতাব্দীতে ব্রাজিলের দীর্ঘ অপেক্ষা আর আনচেলত্তির অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা—দুটি গল্প যেন এক সূত্রে বাঁধা। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে হয়তো ফুটবল দুনিয়া দেখবে সেই স্বপ্নের মঞ্চ, যেখানে এক ইতালিয়ান কোচ লড়বেন ব্রাজিলের হয়ে, আর লক্ষ্য থাকবে ইতিহাসের সবচেয়ে রোমান্টিক সমাপ্তি—ব্রাজিলের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মধ্যরাতে বিএনপির চার নেতাকে বহিষ্কার

খালেদা জিয়াকে প্রার্থী ঘোষণা করায় ফেনীতে উচ্ছ্বাস

মেসিকে সেরা মানতে নারাজ রোনালদো!

বগুড়ায় বিএনপির প্রার্থী হলেন যারা

ফিফপ্রোর বর্ষসেরা একাদশ ঘোষণা, জায়গা পেলেন কারা?

দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীদের

তুরাগে মোস্তফা জামানের উঠান বৈঠকে জনতার ঢল

বিএনপি শুধু পরিবর্তনের কথা বলে না, বাস্তবায়নও করে : মিল্লাত

বগুড়ায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান প্রার্থী হওয়ায় আনন্দ মিছিল

বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী হয়ে ভোটযুদ্ধে আপন দুই ভাই

১০

বাবার আসন পুনরুদ্ধারে লড়বেন নায়াব ইউসুফ

১১

সহকর্মীকে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে নিউরোসার্জনকে অব্যাহতি

১২

সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

১৩

শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জে বিএনপির ভরসা মমিনুল হক

১৪

৪৫ রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স বহালসহ ৮ দাবিতে আলটিমেটাম

১৫

বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিতদের ‘সুখবর’ দিলেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

১৬

এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা শিগগিরই, যেসব আসনে লড়তে পারেন শীর্ষ নেতারা

১৭

যে জেলার কোনো আসনেই প্রার্থী দেয়নি বিএনপি

১৮

সেই প্রিয়াঙ্কাতেই আস্থা বিএনপির

১৯

ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী ‘মায়ের ডাকের’ তুলি

২০
X