বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে শনিবার বঙ্গবন্ধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সেমিফাইনালে কুয়েতের বিপক্ষে ১-০ গোলে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা গোলশূন্যভাবে শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ের প্রথম অর্ধের যোগ করা সময়ে পিছিয়ে পড়ে ক্যাবরেরার দল। ওই একটি গোল ঠিক করে দেয় ম্যাচের ভাগ্য।
ফলে দুর্দান্ত এক ম্যাচ খেলেও বাংলাদেশ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বিদায় নিয়েছে। পরাজিত হলেও ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা শিষ্যদের প্রশংসাই করেছেন।
বাংলাদেশের কোচ বলেন, ‘জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল, আমার মনে হয় কুয়েত কোচও এটাতে একমত হবেন। গতকাল আমরা কয়েকটি বিষয় গুছিয়ে নেওয়ার এবং মাত্র একটি সেশন করার সময় পেয়েছি। কিন্তু এরপরও দল যেভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলেছে অবিশ্বাস্য এবং অকল্পনীয়। আমি মনে করি, আমরা জয়ের যোগ্য ছিলাম এবং এ কারণেই আমরা ফল নিয়ে হতাশ। কিন্তু ছেলেদের পারফরম্যান্সে গর্বিত আমি।’
একইসঙ্গে জয় না পাওয়াকে খানিকটা দুর্ভাগ্যের মন্তব্য করে খেলোয়াড়দের প্রশংসা করলেন তিনি, ‘ফলাফলের দিক থেকে দুর্ভাগ্যজনক, কিন্তু পারফরম্যান্সের বিবেচনায় দুর্দান্ত।’
দ্বিতীয় মিনিটেই কুয়েতকে কোণঠাসা করে ফেলতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু সুবর্ণ সুযোগ হারান শেখ মোরছালিন। দ্বিতীয়ার্ধে রাকিবের শট লাগে ক্রসবারে। ম্যাচের শেষদিকে প্রাণপণ চাপ দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি বাংলাদেশের। ক্যাবরেরার হতাশা তাই আরও বেশি।
‘আবারও সুযোগ হারানোর দুঃখ আছে আমাদের। তবে কুয়েত এই টুর্নামেন্টে ফেভারিট দল এবং গ্রুপ সেরা হয়ে, টানা আট বা নয়টি ম্যাচ জিতে এখানে এসেছে এবং কেউ ভাবেনি আমরা তাদের বিপক্ষে ভালো করব। কিন্তু আমরা ফাইনালের পথেই ছিলাম। ৯০ মিনিটের মধ্যে প্রথম মিনিটেই (দ্বিতীয় মিনিট) সুযোগ পেলাম। আমার মনে হয়, যদি গোলটা পেতাম, তাহলে দ্বিতীয়ার্ধে কুয়েতকে চাপ দিতে পারতাম আরও। আমি মনে করি না, ওরা আমাদের বিপক্ষে বেশি সুযোগ তৈরি করেছে। ছেলেদের নিয়ে ইতিবাচক ছাড়া কিছুই বলার নেই আমার।’
‘বাংলাদেশের খেলার মান এটাই (কুয়েতের বিপক্ষের পারফরম্যান্স) হওয়া উচিত। আমাদের উচিত নয় এর নিচের মানের ফুটবল খেলা এবং এই মান ধরে রাখা উচিত আমাদের। কঠিন, কঠিন ম্যাচ হয়েছে, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ছেলেদের পারফরম্যান্সে ভীষণ গর্বিত আমি।’
টুর্নামেন্টের আরেক অতিথি দল কুয়েতের বিপক্ষে দারুন ফুটবল উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী অক্টোবরে শুরু হতে যাওয়া ২০২৬ বিশ্বকাপের এশিয়া অঞ্চলের বাছাইয়ে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে বলে মনে করেন ক্যাবরেরা।
‘এই টুর্নামেন্টে এসে আমরা যেটা পেয়েছি, সেটা হচ্ছে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা। প্রস্তুতি ম্যাচসহ গত ছয় ম্যাচে দল ধারাবাহিকভাবে পারফরম করেছে। দেখিয়েছে র্যাঙ্কিংয়ের উপরের দিকের দলগুলোর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সমার্থ্য আছে আমাদের। মেধাবী তরুণ এবং অভিজ্ঞদের মিশেলে আমাদের দলটা দারুণ। আমাদের সমর্থন দরকার। আমরা যদি এই মান ধরে রাখতে পারি, তাহলে বিশ্বকাপ বাছাই আমাদের জন্য সহজ হবে।’
মন্তব্য করুন