রজার ফেদেরার, রাফায়েল নাদাল ও নোভোক জোকোভিচ। সম্ভবত প্রভাব ও মেধার দিক দিয়ে আধুনিক টেনিসের শেষ তিন সেরা খেলোয়াড়। ইতিমধ্যেই ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন রজার ফেদেরার, আরেক বছর খেলে নিজের টেনিস র্যাকেট তুলে রাখবেন রাফায়েল নাদাল, তবে ৩৬ বছর বয়সেও প্রবল প্রতাপের সাথে খেলে যাচ্ছেন সার্বিয়ান টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচ। মাত্রই ইউএস ওপেন জিতে সর্বোচ্চ গ্রান্ড স্লামের চূড়োয় বসা এই সার্বিয়ান জানালেন তিনি আরও খেলে যেতে চান।
৩৬ বছর বয়সে সাধারণত যে কোনো ক্রীড়াবিদই নিজের ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলে। তবে নোভাক জোকোভিচ সাধারণ কেউ নন। নোভাক জোকোভিচ নিজের রাজত্ব ছাড়তে এখনই প্রস্তুত নন। সদ্য শেষ হওয়া ইউএস ওপেনের ফাইনালে দানিল মেদভেদেভের বিরুদ্ধে তার সরাসরি ৬-৩, ৭-৬(৫), ৬-৩ সেটে জয় ফ্লাশিং মেডোজে তার চতুর্থ শিরোপা এবং এই ট্রফি দিয়ে নিজের ২৪তম গ্রান্ড স্লাম জয়ের পাশাপাশি নারী ও পুরুষ একক মিলে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গ্রান্ড স্লাম জয়ে নারী টেনিসের কিংবদন্তি মার্গারেট কোর্টের পাশে বসলেন তিনি। জোকোভিচ স্পষ্টতই টেনিসে আরও কৃতিত্বের দিকে নজর রেখেছেন।
নিজের অবসর ভাবনা সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে জোকোভিচ বলেন, ‘মাঝে মাঝেই আমি নিজেকে জিজ্ঞাসা করি, এত কিছু করার পরেও কেন এই পর্যায়ে আমি খেলে যাচ্ছি, আপনি জানেন? আমি কতক্ষণ চালিয়ে যেতে চাই? আমার মাথায় অবশ্যই এই প্রশ্নগুলো আছে।’
সেই সাথে তিনি আরও জানান, যতদিন পর্যন্ত ভালো খেলছেন ততদিন কোর্ট ছাড়ার ইচ্ছে নেই তার। তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে, আমি এখনো কোন স্তরে খেলছি এবং আমি এই খেলার সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট জিতে চলছি, হ্যাঁ, আমি শীর্ষ থাকা অবস্থায় এই খেলা ছাড়তে চাই না।’
জোকোভিচ ফাইনালে যাওয়ার পথে তরুণ আমেরিকান প্রতিভা টেলর ফ্রিটজ এবং বেন শেলটনকে পরাজিত করেন। তারপরে তিনি দানিল মেদভেদেভের মুখোমুখি হন, এই মেদভেদেভই ২০২১ সালে এক ক্যালেন্ডার বর্ষে তার চার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়কে নস্যাৎ করেন।
‘আমার দল, আমার পরিবার জানত যে, ম্যাচের আগের ২৪ ঘণ্টা, আমাকে স্পর্শ করবেন না, আমার সাথে কথা বলবেন না, আপনি জানেন, লাইনে যা আছে তার ইতিহাস,’ তিনি বলেন।
‘আমি সত্যিই আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি জিনিসগুলোকে বেশ সহজ রাখার জন্য এবং রুটিন অনুযায়ী লেগে থাকতে যা আমাকে আমার আজকের জায়গায় নিয়ে এসেছে এবং এই ম্যাচটিকে সত্যিই অন্য যে কোনো ম্যাচ হিসেবে আমি বিবেচনা করেছি যেখানে আমার শুধু জিততেই হবে।’
এই বছরই তিনি অস্ট্রেলিয়ায় নাদালের ২২টি গ্রান্ড স্লামের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন এবং রোল্যান্ড গ্যারোসকে জিতে পুরুষদের রেকর্ডটি নিজের করেন। উইম্বলডনে কার্লোস আলকারাজের কাছে হারের পর হয়তো জোকোভিচ ভেবেছিলেন, হয়তো নতুন রাজা এসেছে কিন্তু সিনসিনাটি এবং ফ্লাশিং মিডোতে তার জয় আপাতত পুরুষদের টেনিসে তার আধিপত্য বজায় রাখবে।
মন্তব্য করুন