মরক্কোয় ভয়াবহ ভূমিকম্পের মাত্র কয়েক মিনিট আগে খাদিজার মেয়ের জন্ম হয়। শিশুটির এখনো নামই রাখা হয়নি। অথচ পৃথিবীতে তার প্রথম ঘর খোলা আকাশের নিচে। সড়কের পাশের তাঁবুতে মা-বাবার সঙ্গেই বাস করছে শিশুটি।
গত শুক্রবার শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে মরক্কোয়। সময় যত গড়াচ্ছে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত ভয়াবহ তথ্য উঠে আসছে। এরই মধ্যে নিহতের সংখ্যা দুই হাজার ১০০ ছাড়িয়েছে। সমসংখ্যক মানুষ আহতও হয়েছেন।
সৌভাগ্যবশত ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে খাদিজা ও তারা মেয়ের কিছু হয়নি। তবে মারাকেশের যে হাসপাতালে তারা ছিলেন তা খালি করা হয়েছে। শিশুটির জন্মের মাত্র তিন ঘণ্টা পরই তাদের হাসপাতাল থেকে চলে যেতে বলা হয়। অবশ্য বের করে দেওয়ার আগে তাদের সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খাদিজা বলেন, ভূমিকম্প পরবর্তী পরাঘাতের ভয়ে তারা (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) আমাদের চলে যেতে বলেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন কথায় শুক্রবার ভোরেই নবজাতক ও স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামে যেতে ট্যাক্সি ভাড়া করেন খাদিজার স্বামী। তাদের বাড়ি আটলাস পর্বতমালার তাদদার্টে, যা মারাকেশ শহর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
কিন্তু পথিমধ্যে তারা দেখতে পান, ভূমিধসে সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্রামে যেতে না পেরে সড়কের পাশে তাঁবুতেই বাস করছেন তারা।
মেয়েকে কোলে নিয়ে খাদিজা বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য-সহায়তা পাইনি। গ্রামের মানুষের কাছ থেকে কিছু কম্বল নিয়েছি। আমাদের একমাত্র আল্লাহ আছে।
আপাতত তাঁবুতেই তাদের বাস। এভাবে কদিন থাকতে হবে তা-ও জানেন না। গ্রামের আত্মীয়রা তাদের জানিয়েছেন, সেখানে বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে তারাও জানেন না, বসবাসের উপযোগী বাড়িঘর আদৌ পাবেন কিনা।
মন্তব্য করুন