ইউরোপে পাম তেল রপ্তানির বড় সুযোগ পেতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রপ্তানি নিয়ন্ত্রক স্থগিতাদেশ কার্যকরে বিলম্বের খবরে আনন্দে ভাসছেন ইন্দোনেশিয়ানরা। এর ফলে বিশ্বে পাম তেলের দামেও হেরফের হতে পারে। খবর রয়টার্সের।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি এবং ইইউ কর্তৃক দ্বিতীয়বারের জন্য বন উজাড়বিরোধী আইন স্থগিত রাখার ফলে ২০২৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইন্দোনেশিয়ার পাম তেল রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) একটি শিল্প সংস্থার প্রধান রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে ইইউ পরিবেশ কমিশনার জেসিকা রোসওয়াল মঙ্গলবার বলেন, ইইউ বন উজাড়বিরোধী আইন কার্যকরে দেরি হবে। এটি আগামী বছরের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ান পাম অয়েল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এডি মার্টোনো বলেন, আইনটি কার্যকরের এই বিলম্ব ভালো ।কারণ এটি সরকারকে প্রস্তুতির জন্য সময় দেবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র চাষিদের বেশ উপকার হবে।
আইনটি ৩০ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। আইন অনুযায়ী- ইইউর বাজারে সয়া, গরুর মাংস এবং পাম তেলসহ কিছু পণ্য রপ্তানিতে ইন্দোনেশিয়াকে বিশেষ প্রমাণ দিতে হয়। রপ্তানিকারকদের ঘোষণা করতে হয়, তাদের পণ্য বন উজাড়ের কারণ নয়। এ ধরনের প্রমাণ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।
মার্টোনো বলেন, ইন্দোনেশিয়ার ইইউতে পাম তেল রপ্তানি ২০২৬ সালে প্রায় ৪ মিলিয়ন টনে উন্নীত হতে পারে। চলতি বছরে আনুমানিক ৩.৩ মিলিয়ন টন রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশটি এবং ইইউ ৯ বছর ধরে আলোচনার পর মঙ্গলবার একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। যার লক্ষ্য রপ্তানি এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।
এদিকে জাকার্তার ভারতে পাম তেল রপ্তানি গত বছরের ৪.৮ মিলিয়ন টন থেকে ২০২৫ সালে ৫ মিলিয়ন টনে উন্নীত হওয়ার আশা করা হচ্ছে। যদিও ২০২৬ সালে পাম তেলের চালান কেমন হবে তা বলা মুশকিল। তা পাম তেল এবং প্রতিযোগী ভোজ্যতেলের দামের ওপর নির্ভর করবে।
তার মতে, ভারত ল্যাটিন আমেরিকা থেকে সয়াবিন তেলের মতো সস্তা বিকল্পগুলো আমদানি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ভারতের বাজার ধরতে পাম তেলের দাম প্রতিনিয়ত সমন্বয় করা উচিত।
ধারণা করা হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে পাম তেলের চালান আংশিকভাবে সয়াতেল দ্বারা প্রতিস্থাপিত হতে পারে। কারণ শীর্ষ সয়াতেল রপ্তানিকারক আর্জেন্টিনা বড় এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির রপ্তানি শুল্ক অপসারণের ফলে সয়াতেল পাম তেলের তুলনায় সস্তা হয়ে গেছে। বিষয়টি সম্ভাব্য মূল্য সংবেদনশীল ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে। তবে এ করমুক্তি ঠিক কতদিন থাকবে তাও নিশ্চিত নয়। আর্জেন্টিনা বলেছে, সয়াসহ আরও কিছু শস্যে সাময়িকভাবে শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববাজার ধরতে তাদের এ সিদ্ধান্ত প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
মন্তব্য করুন