দখলদার ইসরায়েল রাষ্ট্র যে কোনো সময় যেকোনো প্রতিবেশী দেশে হামলা চালাতে পারে। সেই উপলব্ধি থেকেই মুসলিম তথা আরব বিশ্বকে বাঁচাতে ন্যাটোর আদলে একটি সামরিক বাহিনী গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল মিসর। কিন্তু আলোর মুখ দেখার আগেই সেই প্রস্তাবের মৃত্যু ঘটেছে। এখন এ নিয়ে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। কেন সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়, তা নিয়ে অবাক করা তথ্য দিয়েছেন মিসরের একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক।
কাতারে কয়েক দিন আগে ইসরায়েল হামলা চালানোর পর দোহায় এক জরুরি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক জোট ন্যাটোর আদলে একটি বাহিনী গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল মিসর। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সেই প্রস্তাব আটকে দেয়। খবর মিডল ইস্ট আইয়ের।
পরে মিসরের একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক জানান, ১৯৫০ সালের যৌথ প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তির অধীনে মিশর একটি প্রতিরক্ষামূলক আঞ্চলিক বাহিনী প্রস্তাব করেছিল। যার লক্ষ্য ছিল সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বহিরাগত হুমকি, বিশেষ করে ইসরায়েলের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য একটি দ্রুত-প্রতিক্রিয়াশীল জোট প্রতিষ্ঠা করা।
তবে কাতার ও আমিরাতের কারণে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। মূলত বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর না করে আঞ্চলিক সুরক্ষার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধেই তুলে নিতে চেয়েছিলেন আরব নেতারা। কিন্তু কোন দেশ এই বাহিনীর নেতৃত্ব দেবে এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। সৌদি আরব বাহিনীর নেতৃত্ব দিতে চেয়েছিল। কিন্তু নিজেদের দীর্ঘ সামরিক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে মিসর নেতৃত্ব নিতে চেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এমন একটি বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। এরপরই সৌদি আরব পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করে। ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান উচ্চাভিলাষের জন্য এমন কাজ করে রিয়াদ।
এর বাইরে ইরান বা তুরস্ক প্রশ্নেও একমত হতে পারেননি মুসলিম বিশ্বের নেতারা। বিশেষ করে ইরান ও তুরস্ককে এই জোটের বাইরে রাখার মত দেয় উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতারা। তারা চেয়েছিলেন এই জোটের সদস্য শুধু উপসাগরীয় দেশগুলোই হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছু না ঘটায় একরাশ হতাশা নিয়েই দেশে ফেরেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি।
মন্তব্য করুন