দেশের পূর্ব উপকূলের জলরাশিতে বেশ কয়েকটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকালে কিম জং উনের দেশ এসব ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ (জেসিএস)। এ নিয়ে মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো সাগরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল দেশটি। খবর বিবিসির।
এক বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার জেসিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৮টায় সিনপো বন্দরের কাছে বেশ কয়েকটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। তবে কতটি বা কী ধরনের ক্রজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। এসব জানকে আমাদের সামরিক বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করে কাজ করছে।
এর আগে গত বুধবার (২৪ জানুয়ারি) পুলহওয়াসল-৩-৩১ নামে নতুন একটি কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে উত্তর কোরিয়া।
উত্তর কোরিয়ার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ আর হুমকি ঘিরে কোরীয় উপদ্বীপে প্রায় সব সময় উত্তেজনা বিরাজ করে। সম্প্রতি কিম জং উনের দেশ মহাকাশে সামরিক গোয়েন্দা স্যাটেলাইট পাঠালে এই উত্তেজনা আরও বাড়ে। উত্তর কোরিয়ার এসব কর্মকাণ্ড মোকিবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে সমন্বয় করে সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
গত শুক্রবার উত্তরের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানায় জানিয়েছে, পানির তলদেশে হামলা করতে সক্ষম পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থার পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের যৌথ নৌ মহড়ার প্রতিবাদে এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে দাবি পিয়ংইয়ংয়ের। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি মাঝারি পাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের চাপে বিশ্ব থেকে প্রায় একঘরে হয়ে আছে উত্তর কোরিয়া। এমন পরিস্থিতিতে মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলছে পিয়ংইয়ং। উত্তরের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সন হুই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের আমন্ত্রণে গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত রাশিয়া সফর করেছেন। এ সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়া সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উত্তরের প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের আমন্ত্রণে শিগগিরই পিয়ংইয়ং সফর করবেন তিনি।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়। মার্কিন সরকারের দাবি, উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে রাশিয়া। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হস্তান্তর ও পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনটি রুশ প্রতিষ্ঠান এবং এক ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। তবে দুই দেশই নিজেদের মধ্যে কোনো ধরনের অস্ত্র চুক্তি করার কথা অস্বীকার করে আসছে।
মন্তব্য করুন