চীনের হেনান প্রদেশের ইয়ুনতাই জলপ্রপাতকে দেশটির সর্বোচ্চ বিরামহীন ঝরনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।সেখানকার কর্তৃপক্ষই এমনটা আখ্যা দিয়ে থাকেন।
ইয়ুনতাই জলপ্রপাতের উচ্চতা ১ হাজার ৩০ ফুট। একে প্রাকৃতিক নয়ানাভিরাম ঝরনা হিসেবেই জানেন সবাই। তাই প্রতি বছরই ইয়ুনতাই মাউন্টেন টুরিজম পার্কে জড়ো হন কয়েক লাখ মানুষ।
কিন্তু হঠাৎ করেই বিখ্যাত এই ঝরনা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন এক পাহাড়চারী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওসহ এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, ঝরনাটি মোটেই প্রাকৃতিক নয়। বরং তা কৃত্রিমভাবে তৈরি। কারণ, এর পানি পড়ছে পাইপ দিয়ে। ঝরনার উৎস খুঁজতে গিয়েই এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য আবিষ্কার করেন ওই পাহাড়চারী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝরনাটির ভিডিওসহ পাহাড়চারীর ওই পোস্ট এখন গোটা দুনিয়াজুড়ে ভাইরাল। শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। ভিডিওটি ঘিরে তৈরি হয় নানা জল্পনা-কল্পনার। অনেকেই ঝরনার রহস্য জানতে পেরে হতবাক হয়েছে। নেটদুনিয়ায় প্রকাশ করছেন বিস্ময়।
সোমবার প্রথমবারের মতো ভিডিওটি পোস্ট করা হয় চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে। এরই মধ্যে এর ভিউ ছাড়িয়ে গেছে ১ কোটি ৪০ লাখ। চীনের আরেক ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ডুয়িনে এই ভিডিওটি ১ কোটি বারেরও বেশি দেখা হয়েছে।
ঝরনা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় এই বিষয় নিয়ে শেষ পর্যন্ত মুখ খুলেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ইয়ুনতাই টুরিজম পার্কের পরিচালকরা বিষয়টিকে একটি ‘ছোট সংস্কার’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
তাদের দাবি, পাহাড়ের ফাঁক গলে সেখানে একটি ঝরনার অস্তিত্ব প্রাকৃতিক। তবে শুকনো মৌসুমে পর্যটকদের আকর্ষণ ধরে রাখতেই পাইপ দিয়ে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে দর্শণার্থীরা হতাশ না হন।
‘ইয়ুনতাই মাউন্টেন জিওপার্ক’ ইউনেসকোর গ্লোবাল জিওপার্কের অন্তর্ভুক্ত। বলা হয়, ১০০ কোটি বছরেরও বেশি সময় আগে এই অঞ্চলটি পাহাড়ি প্রকৃতির রূপ নিয়েছিল।
তবে পার্কের কর্মকর্তারা চীনা গণমাধ্যম সিসিটিভিকে জানায়, সাধারণত বসন্ত মৌসুমে পাইপ দিয়ে পানি পাম্প করা হয়; যা ওই স্থানের প্রাকৃতিক পরিবেশকে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না।
ভাইরাল এই ইস্যুটিকে চীনের অসংখ্য মানুষ ইতিবাচকভাবেও দেখেছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, ‘কাজটির উদ্দেশ্য ভালো। তা না হলে দর্শনার্থীরা সেখানে গিয়ে কিছু না দেখতে না পেয়ে হতাশ হতেন।’
কেউ আবার বিস্ময় প্রকাশ করে বলছেন, ‘কীভাবে তারা এখন এটিকে এক নম্বর ঝরনা হিসেবে বিবেচনা করবেন!’
মন্তব্য করুন