রাশিয়া এক রহস্যময় বিমান দুর্ঘনায় নিহত হয়েছেন রুশ ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। এই দুর্ঘটনার আগেই তার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন পশ্চিমা নেতারা। এমনকি তার মৃত্যুর পর অভিযোগের আঙুল সবার প্রথমেই তোলা হয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিকে। তবে মৃত্যুর আগে, প্রিগোজিন কী ভাবছিলেন? আঁচ করতে পেরেছিলেন, তার পরিণতি কী হবে?
ওয়াগানপ্রধান প্রিগোজিনের মৃত্যুর আগে ধারণ করা সর্বশেষ ভিডিওতে উঠে আসে তার ভাগ্য নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে ওয়াগনার সংশ্লিষ্ট টেলিগ্রাম গ্রুপ ‘গ্রে জোন’। ভিডিওতে নিজের ভাগ্য ও বর্তমান অবস্থান নিয়ে মতামত জানান প্রিগোজিন, বলেন সবকিছু ঠিক আছে।
প্রকাশিত ভিডিওতে প্রিগোজিনকে সামরিক পোশাক ও টুপি পরা অবস্থায় একটি গাড়িতে চড়ে কোথাও যাচ্ছেন বলে দেখা যায়। এ সময় তার ডান হাতে একটি ঘড়ি ছিল। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায় তিনি আফ্রিকায় আছেন। জবাব দেন তার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ নিয়ে।
প্রিগোজিন বলেন, যারা আলোচনা করছে আমি জীবিত আছি নাকি মারা গেছি, অথবা আমি এখন কী করছি? এটা সপ্তাহের শেষ দিন, ২০২৩ সালের আগস্টের দ্বিতীয়ার্ধ। আমি আফ্রিকায় আছি। যারা আলোচনা করছে আমাকে হত্যা করা নিয়ে, অথবা আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বা আমি কী পরিমাণ আয় করি এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে, তাদের বলতে চাই সবকিছু ঠিক আছে।
ভিডিওতে তাকে সপ্তাহের শেষদিন বলতে শোনা গেছে, ফলে ধারণা করা হচ্ছে ভিডিওটি আগস্টের ১৯ অথবা ২০ তারিখ ধারণ করা হয়েছে। যা তার মৃত্যুর দুই অথবা তিন দিন আগে ধারণ করা। ভিডিওতে প্রিগোজিনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে বোঝা যায় তিনি তার হত্যার হুমকি সম্পর্কে অবগত ছিলেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই পরিচিত ছিলেন ওয়াগনারপ্রধান প্রিগোজিন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল ওয়াগনার সেনারা। এমনকি ইউক্রেনের বাখমুত শহর দখলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ওয়াগনার বাহিনী।
তবে রুশ সামরিক নেতাদের প্রতি অসন্তোষ থেকে গত ২৩ জুন বিদ্রোহের ঘোষণা দেন প্রিগোজিন। যদিও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় সেই বিদ্রোহ থেকে সরে আসেন তিনি। এ বিদ্রোহের পর পুতিনের চক্ষুশূলে পরিণত হন প্রিগোজিন। এ বিদ্রোহের দুই মাস পর গত বুধবার (২৩ আগস্ট) মস্কোয় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারালেন প্রিগোজিন।
এ ঘটনায় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের হাত থাকতে পারে বলেও অভিযোগ তুলেছে পশ্চিমারা। যদিও তারা এ দাবির বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ হাজির করতে পারেননি।
এ ঘটনার পরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, প্রিগোজিনের মৃত্যুতে তিনি বিস্মিত হননি। রাশিয়ায় খুব বেশি ঘটনা ঘটে না, যেখানে পুতিনের হাত নেই। তবে পশ্চিমাদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ক্রেমলিন।
মন্তব্য করুন