রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনকে বহন করা বিমানটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভূপাতিত করা হয়েছে কিনা, তা রুশ তদন্ত কর্মকর্তারা বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখছেন বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। বিমান দুর্ঘটনার সাত দিন পর আজ বুধবার (৩০ আগস্ট) প্রথমবারের মতো প্রিগোজিন হত্যার শিকার হয়ে থাকতে পারে বলে কোনো রাখঢাক ছাড়াই স্বীকার করল রাশিয়া। খবর রয়টার্সের।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এ ঘটনার বিভিন্ন দিকই বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। রাখঢাক ছাড়া বলতে গেলে ইচ্ছাকৃত এই নৃশংস ঘটনা ঘটানো হয়েছে কিনা, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার (২৩ আগস্ট) মস্কোর টিভের অঞ্চলে একটি বেসরকারি বিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানের ১০ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। বিধ্বস্ত বিমানে প্রিগোজিনও ছিলেন। বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রিগোজিনের মৃত্যু নিয়ে প্রথমে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হলেও রুশ তদন্ত দল জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হয়েছেন।
তবে প্রিগোজিনের মৃত্যু বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেলেও ঠিক কী কারণে এই বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি। যদিও দুর্ঘটনাস্থলের বাসিন্দারা রয়টার্সকে বলেছেন, তারা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। বিস্ফোরণের পরপরই বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়ে বলেও জানান তারা।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই পরিচিত ছিলেন ওয়াগনারপ্রধান প্রিগোজিন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল ওয়াগনার সেনারা। এমনকি ইউক্রেনের বাখমুত শহর দখলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ওয়াগনার বাহিনী।
তবে রুশ সামরিক নেতাদের প্রতি অসন্তোষ থেকে গত ২৩ জুন বিদ্রোহের ঘোষণা দেন প্রিগোজিন। যদিও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় সেই বিদ্রোহ থেকে সরে আসেন তিনি। এ বিদ্রোহের পর পুতিনের চক্ষুশূলে পরিণত হন প্রিগোজিন। এ বিদ্রোহের দুই মাস পর গত বুধবার মস্কোয় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারালেন প্রিগোজিন।
এ ঘটনায় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের হাত থাকতে পারে বলেও অভিযোগ তুলেছে পশ্চিমারা। যদিও তারা এ দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারেননি।
এ ঘটনার পরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, প্রিগোজিনের মৃত্যুতে তিনি বিস্মিত হননি। রাশিয়ায় খুব বেশি ঘটনা ঘটে না, যেখানে পুতিনের হাত নেই। তবে পশ্চিমাদের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ক্রেমলিন।
মন্তব্য করুন