ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও তার আশপাশে মধ্যরাতে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এ হামলায় শক্তিশালী ড্রোন-মিসাইল ব্যবহার করে মস্কো।
সোমবার (২৩ জুন) গভীর রাতে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রয়টার্সকে এ তথ্য জানান।
রাতের হামলায় এক শিশুসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। আবাসিক এলাকায় আগুন লেগে রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেট্রো স্টেশন ও বোমা আশ্রয়কেন্দ্রের প্রবেশপথ।
মার্কিন দূতাবাস থেকে এক কিলোমিটারেরও কম দূরে কিয়েভের ব্যস্ত শেভচেনকিভস্কি জেলার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে হামলা হয়। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গোটা এলাকা। সেখান থেকে উদ্ধারকর্মীরা মৃতদেহ উদ্ধার করছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জেলায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
৩৩ বছর বয়সী ভ্যালেরি মানকুতা বর্ণনা করেন, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হানার পর তিনি তার জানালা দিয়ে তৃতীয় তলায় লাফিয়ে পড়েন। কীভাবে বেঁচে গেছি জানি না। ভয়ংকর বিস্ফোরণ হচ্ছিল। রয়টার্স ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ শনাক্ত করেছে। হামলার পর সেসবের ছবি তুলে রেখেছেন সাংবাদিকরা।
নির্মাণশ্রমিক মানকুতা বলেন, আমার গায়ে ইট ভেঙে পড়ে। আমার মুখে বালু ঢুকে যায়। এটা সম্পূর্ণ নরক ছিল। আমি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়ি। সেখান থেকে কোনো মতে বের হই।
কিয়েভের জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, কিয়েভে হামলায় চার শিশুসহ কমপক্ষে ৩৪ জন আহত হয়েছে।
মধ্যরাত থেকে প্রায় ভোর পর্যন্ত হামলা চলে। শহরটি বিস্ফোরণ এবং ড্রোনগুলোকে লক্ষ্য করে বিমান বিধ্বংসী ইউনিটের মেশিনগানের গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, তারা চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলে আক্রমণ হয়েছে। রাশিয়ার ৩৫২টি ড্রোনের মধ্যে ৩৩৯টি এবং ১৬টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ১৫টি ভূপাতিত করেছে তারা।
সোমবারের হামলাগুলো হেগে ন্যাটোর বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার একদিন আগে ঘটল। এ সম্মেলনে সাহায্যপ্রাপ্তি নিয়ে আলোচনা করতে ভলোদিমির জেলেনস্কি ব্রিটেন সফর করছেন।
ইউক্রেন দাবি করেছে, রুশ বাহিনী ইচ্ছেকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা করছে। মধ্যরাতের হামলাও এর একটি উদাহরণ। তবে রাশিয়া সর্বশেষ হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
মন্তব্য করুন