পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো মোকাবিলায় কঠোর অবস্থানে রয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বর্তমান ঘটনাপ্রবাহের বর্ণনায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এমনটিই বলছে।
জানা গেছে, রাশিয়ার সীমান্তের কাছে বড় ধরনের মহড়া চালাচ্ছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। এই মহড়ায় জোটটির ৯০ হাজার সেনা অংশ নিয়েছে। স্নায়ুযুদ্ধের পর ন্যাটোর সবচেয়ে বড় এই মহড়া মে মাস পর্যন্ত চলবে। শক্তিশালী এই মহড়ায় মার্কিন সেনারা রাশিয়ার সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে এবং জোটের পূর্ব প্রান্তে কোনো ধরনের সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে ইউরোপীয় মিত্রদের কীভাবে সাহায্য করবে সেই প্রস্তুতিও নেবে।
এই অবস্থায় রুশ সামরিক বাহিনীকে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন কাজের মহড়া চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত হুমকির মুখে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে এই মহড়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সোমবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর থেকে রাশিয়া বারবার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে আসছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার এই সতর্ক বার্তাকে গুরুত্বের সাথে নেওয়ার জন্য পশ্চিমা বিশ্বকে বারবার সাবধান করছেন।
রাশিয়া বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা ইউক্রেনকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে বিশ্বকে পারমাণবিক সংঘর্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। আর এসব অস্ত্রের কিছু রাশিয়ার ভূখণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মস্কো নন-স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি ও মোতায়েনসহ সামরিক মহড়া চালাবে।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই মহড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মহড়া চলাকালীন নন-স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্রের প্রস্তুতি এবং ব্যবহারের বিষয়গুলোর কয়েক ধাপে চালানো হবে।
রাশিয়ার সাউদার্ন মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীও এই মহড়ায় অংশ নেবে। রাশিয়ান ফেডারেশনের বিরুদ্ধে কিছু পশ্চিমা কর্মকর্তার উস্কানিমূলক বিবৃতি ও হুমকির প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করাই এই মহড়ার লক্ষ্য বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম।
এখন পর্যন্ত রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। বিশ্বের মোট ১২ হাজার ১০০টি পারমাণবিক ওয়ারহেডের মধ্যে ১০ হাজার ৬০০টিরও বেশি এই দুই দেশের অস্ত্র ভান্ডারে রয়েছে। তৃতীয় বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে চীনের হাতে। এরপরই পারমাণবিক অস্ত্রধর দেশের তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে ফ্রান্স ও ব্রিটেন।
মন্তব্য করুন