কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ভারতের প্রতিক্রিয়া অ-উত্তেজক, সুনির্দিষ্ট, সঠিক, পরিমিতি ও বিবেচনাযোগ্য ছিল বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
ভারতের চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যায় দ্বিতীয়বার সংবাদমাধ্যমের সামনে হাজির হন তিনি। এ সময় তিনি এ দাবি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।
বিক্রম মিশ্রি বলেন, এখন আমরা যে ধারাবাহিক ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষ করছি, এর সূত্রপাত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার সময় থেকে। সেখান থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছিল। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর তাদের পদক্ষেপের মাধ্যমে সেই উত্তেজনার জবাব দিয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, যখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পেহেলগাম হামলার বিষয়ে বিবৃতি জারির বিষয়ে আলোচনা করছিল, তখন আপনি কল্পনা করতে পারেন যে কোনো দেশ টিআরএফ (প্রতিরোধ ফ্রন্ট) উল্লেখের বিরোধিতা করেছিল— এটিই ছিল পাকিস্তান।
তিনি বলেন, ভারতীয় অভিযান নিয়ে বুধবার ব্রিফিংয়ে কর্নেল সোফিয়া ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সব কিছু স্পষ্ট করেছিলেন। বৃহস্পতিবারও পুনরাবৃত্তি করেছেন—তা হলো ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল অ-উত্তেজক, সুনির্দিষ্ট, সঠিক, পরিমিতি ও বিবেচনাযোগ্য।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরও দাবি করেন, সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং তাদের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয়ই স্বীকার করেছেন যে, এ ধরনের গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক কী ছিল। এর পরও পাকিস্তানের দাবি যে, একটি আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত, একটি যৌথ তদন্ত কমিটি থাকা উচিত। এত উসকানি সত্ত্বেও ভারত ধৈর্য ও সহনশীলতার এত বছর চুক্তি মেনে চলেছে।
এর আগে বুধবার প্রথম ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব কাউকে কোনো প্রশ্ন করার অনুমতি দেননি। তবে গতকাল কিছু প্রশ্ন করার অনুমতি দেওয়া হয়। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই সংঘাত পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের দুই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন বলে খবর রটেছে, এর সত্যতা কতখানি। জবাবে বিক্রম বলেন, এ বিষয়ে তার কাছে কোনো খবর নেই।
মঙ্গলবার রাতে ভারতীয় বাহিনীর আক্রমণের খবরের পাশাপাশি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা রাফায়েলসহ পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ফেলে দিয়েছে। তাদের সেই দাবি বা প্রচার আদৌ সত্য কি না—জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যখন সময় হবে তখন এসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চয়ই তথ্য জানানো হবে।
পাশাপাশি বিক্রম মিশ্রি বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের সময় থেকেই তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আসছে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানি বাহিনী জম্মু-কাশ্মীর আক্রমণ করেছিল। কিন্তু তা তারা অস্বীকার করে চলেছিল। তখন থেকেই তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আসছে। জাতিসংঘকেও তারা ওই আক্রমণ নিয়ে মিথ্যা বলেছিল এবং সেই মিথ্যা ধরাও পড়েছিল।
মন্তব্য করুন