ভারতের আলোচিত ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি হয়ে ওঠেন অন্যতম পরিচিত মুখ। পাকিস্তানে এই অভিযানের পর ভারতীয় জনগণের সামনে এর বিস্তারিত তুলে ধরার দায়িত্বও দেওয়া হয় তাকে। এবার আলোচনায় উঠে এসেছেন কর্নেল কুরেশির যমজ বোন—ড. শায়না সুনসারা, যিনি তার বোনের মতোই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী।
গুজরাটের ভাদোদারার একটি সামরিক পরিবারে জন্ম নেওয়া কর্নেল সোফিয়া ও ড. শায়না দুই বোনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনন্য। শায়না শুধু একজন মা বা অর্থনীতিবিদই নন, তিনি একাধারে সেনাবাহিনীর সাবেক ক্যাডেট, ফ্যাশন ডিজাইনার এবং পরিবেশবিদ। ভাদোদারায় তাকে অনেকেই ‘ওয়ান্ডার ওমেন’ বলে অভিহিত করেন।
মডেলিং ও সুন্দরী প্রতিযোগিতার মঞ্চেও তিনি ছিলেন দারুণ সফল—জয় করেছেন মিস গুজরাট, মিস ইন্ডিয়া আর্থ ২০১৭ এবং মিস ইউনাইটেড নেশন্স ২০১৮-এর খেতাব। রাইফেল শুটিংয়ে স্বর্ণপদক অর্জনকারী এই নারী ভারতের রাষ্ট্রপতির হাত থেকেও সম্মাননা গ্রহণ করেছেন। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে অসাধারণ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তাকে দেওয়া হয় দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার।
পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে গুজরাটে তিনি এক লাখ গাছ রোপণ করে আলোচনায় আসেন। তার বোন কর্নেল সোফিয়াকে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রেস ব্রিফিংয়ে পাঠানো হবে—এ কথা আগে থেকেই জানতেন শায়না ও তাদের পরিবার। এখন সেই মুহূর্তটিকে গর্বের বলে মনে করেন তিনি। তার ভাষায়, ‘এটা শুধু আমাদের পরিবারের নয়, বরং সমগ্র ভারতের গর্ব।’
প্রসঙ্গত, কর্নেল সোফিয়া ২০১৬ সালে প্রথম নারী অফিসার হিসেবে একটি বহুজাতিক সামরিক মহড়ার নেতৃত্ব দেন। তার সামরিক ক্যারিয়ার শুরু ১৯৯৯ সালে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্পস অব সিগন্যালে যোগদানের মাধ্যমে। তিনি ১৯৯৭ সালে মহারাজা সায়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োকেমিস্ট্রিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
বর্তমানে কর্নেল সোফিয়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেকানাইজড ইনফ্যান্ট্রিতে কর্মরত। তার স্বামীও সেনাবাহিনীর একজন সদস্য। তিনি ভারতের প্রথম নারী অফিসার হিসেবে কোনো সামরিক কন্টিনজেন্টের নেতৃত্ব দেন। তাদের পিতাও সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং চাচা ছিলেন বিএসএফের অংশ। বলাই যায়, দেশসেবার আদর্শই এই পরিবারের রক্তে প্রবাহিত।
মন্তব্য করুন